মহানগর বার্তা ডেস্ক: ৩০২ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা যেমন করা দরকার ঠিক তেমনই করেছিল বাংলাদেশ। সৌম্য-নাইমের খাপ খোলা ব্যাটে মুহুর্মুহু মাঠের বাইরে গিয়ে বল আছড়ে পড়ছিল। কিন্তু সেই ব্যাটিং প্রলয় খুব বেশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারেননি এই দুই ওপেনার। ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ৪১ রানেই এই দুই ওপেনারকে হারাল লাল সবুজের দল। তৈরী হল চাপ! যা পরের অর্ডারের কোনো ব্যাটসম্যানই কাটিয়ে উঠতে পারলেন না।
ফলাফল? যা হবার তাই হলো। পাকিস্তানের পেস তোপ ও স্পিন ঘূর্ণিতে মাত্র ৪৩ ওভারে ২২৭ রানে গুটিয়ে গিয়ে শিরোপা স্বপ্ন ভাঙল বাংলাদেশের। আর পাকিস্তান জিতল প্রথম ইমার্জিং এশিয়া কাপের শিরোপা।
বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৯ রান আসে আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। টেলএন্ডার মেহেদি হাসান খেলেছেন ৪৫ বলে ৪২ রানের ইনিংস। ওপেনার নাইম শেখ ১৬, সৌম্য সরকার ১৬, ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি ২২, জাকির হাসান ৯, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৫, সুমন খান ৩, হাসান এবং মাহমুদ অপরাজিত ৭ ও তানভির ইসলাম অপরাজিত ছিলেন ৪ রানে।
পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে সাইফ বদর, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন ২টি করে এবং সামিন গুল, আমাদ বাট ও উমর খান ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে শনিবার (২৩ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালের লড়াইয়ে টস হেরে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আয়োজক দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে দলীয় ৪১ রানে দুই ওপেনারকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমান করেন লাল সবুজের এই দলপতি। ওপেনার ওমর ইউসুফকে ৪ রানে উইকেটরক্ষক মাইদুল ইসলাম অঙ্কনের গ্লাভসে তুলে দেন সুমন খান। আরেক ওপেনার হায়দার আলীর শিকারিও সেই সুমন। ব্যাট হাতে ক্রমাগত ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ডান হাতিকে ২৬ রানে নাইম শেখের ক্যাচে পরিণত করেন।
তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলটির ব্যাটিংয়ে চিড় ধরাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে স্বাগতিক বোলারদের। রোহাইল নাজির ও ইমরান রফিকের দায়িত্বশীল ব্যাটে এই জুটিতে আসে ১১৭ রান। এরপরেই অবশ্য পা হড়কান ইমরান রফিক। ব্যক্তিগত ৬২ রানে মেহেদি হাসানের ঘূর্ণিতে সৌম্য সরাকারের ক্যাচ বনে যান। পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ তখন ১৫৮ রান।
রফিকের ফেরায় উইকেটে আসেন অধিনায়ক সউদ শাকিল। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তাকে নিয়ে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের পথে ব্যাট ছোটান রোহাইল নাজির। তুলে নেন সেঞ্চুরিও। অবশেষ ৪৫ তম ওভারে দুধর্ষ রোহাইলের ব্যাটে শেকল পড়ান হাসান মাহমুদ। ১১৩ রানে এই পাক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে এলবি’র ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন।
এই সংগ্রহে রোহাইল খেলেছেন ১১১টি বল। যেখানে চারের মার ছিল ১২টি ও ছয় ৩টি। পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ তখন ২৪৩। সেট ব্যাটসম্যান রোহাইলকে হারালেও পাক শিবিরের মনোবলে এতটুকু চিড় ধরেনি। পরে অর্ডারে যিনিই ব্যাটিংয়ে এসেছেন ঝড়ো ব্যাটিং করে গেছেন। যা পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ ৩শ পেরিয়ে যেতে সহায়ক ভুমিকা রেখেছে।
পঞ্চম উইকেটে আসা খুসদিল শাহর কথাই ধরুন না। ১৬ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলে হাসান মাহমুদের শিকারে পরিণত হলেও দলকে ঠিকই সমৃদ্ধ সংগ্রহের জ্বালানি যুগিয়ে গেলেন। উইকেটের অপর প্রান্তে থাকা অধিনায়ক ৪০ বলে ৪২ রান করে সুমন খানের বলে ফিরলেও পাকিস্তানকে দাঁড় করিয়ে দিলেন ৩শ রানের একেবারে সম্মুখে (২৯১)। এরপর আমাদ বাটের অপরাজিত ৭ বলে ১৫ রান দলটিকে দিল ৬ উইকেটে ৩০১ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।