শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫২ পূর্বাহ্ন

সাভারের ভাকুর্তায় এ বি এম ব্রিকস ত্রি ফসলী কৃষি জমি ও সরকারি খাস জমির মাটি কেটে অবৈধ ইট ভাটা নির্মাণ করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১০ জুন, ২০২০
  • ১৭৮০ বার পড়া হয়েছে /

ঢাকার উপকন্ঠ সাভার উপজেলা ভাকুর্তা ইউনিয়ন পরিষদের ভাকুর্তা গ্রামে ত্রি ফসলী কৃষি জমি ও সরকারি খাস জমির মাটি কেটে ব্রিকস ফিল নির্মাণ করেন এ বি এম কোম্পানি।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন ( নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ ১। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করিবার উদ্দেশ্যে কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা হইতে মাটি কাটিয়া বা সংগ্রহ করিয়া ইটের কাঁচামাল হিসেবে উহা ব্যবহার করিতে পারিবেনা।
২। কতিপয় স্থানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধকরণ ও নিয়ন্ত্রণ। ( ১) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ছাড়পত্র থাকুক বা না থাকুক, এই আইন কার্যকর হইবার পর নিম্নবর্ণিত এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে কোন ব্যক্তি কোন ইটভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না, যথাঃ-
(ক) আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা।
(খ) সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর।


(গ) সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন,অভয়ারণ্যে, বাগান বা জলাভূমি।
(ঘ) কৃষি জমি।
(ঙ)পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা।

৩। এই আইন কার্যকর হইবার পর নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে ইট ভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বা অন্য কোন কতৃপক্ষ কোন আইনের অধীন কোনরূপ অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স, যে নামেই অভিহিত হউক,প্রদান করিতে পারিবে না।
৪। কোন ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত দূরত্বে বা স্থানে ইট ভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না, যথাঃ-
(ক) বিশেষ কোন স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা অনুরুপ কোন স্থান বা প্রতিষ্ঠান হইতে কমপক্ষে ১ (এক) কিলোমিটার এর মধ্যে ইট ভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না।


(খ) বনাঞ্চল হইতে ২ কিলোমিটার দূরে।
(গ) ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক থেকে আধা কিলোমিটার মধ্যে ইট ভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না।
৫। ( আইনের ৬ ধারায় বলা আছে) কোন ব্যক্তি ইট ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসাবে কোন জ্বালানী কাঠ ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
৬। কোন ব্যক্তি ইট ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে নিধারিত মান মাত্রার অতিরিক্ত সালফার, অ্যাশ, মারকারি বা অনুরুপ উপাদান সম্বলিত কয়লা জ্বালানি হিসাবে [আমদানি করিয়া ]৭২ ব্যবহার করিতে পারিবেন না।


৭। আইনানুযায়ী স্থানীয় সরকার, প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্মিত উপজেলা বা গ্রামীণ সড়ক বা ইউনিয়ন পরিষদের সড়ক ব্যবহার করে.. ইট ভাটায় চলাচলের জন্য কোন ভাড়ি যানবাহন চলাচল করিতে পারিবেন না।
ধারা ৫ লঙ্ঘনের দন্ড।- (১) যদি কোন ব্যক্তি, ধারা ৫ এর –
(ক) উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া, ইট প্রস্তুত করিবার উদ্দেশ্য কৃষি জমি বা পাহাড় বা টিলা হইতে মাটি কাটিয়া বা সংগ্রহ করিয়া ইটের কাঁচামাল হিসেবে উহা ব্যবহার করেন;বা
(খ) উপ-ধারা (২) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া, [জেলা প্রশাসকের]৯০ অনুমোদন
ব্যতীত ইট প্রস্তুতের উৎদেশ্য মজা পুকুর বা খাল বা বিল বা খাঁড়ি বা দিঘি বা নদ-নদী বা হাওর-বাওর বা পতিতা জায়গা হইতে মাটি কাটেন বা সংগ্রহ করেন;
তাহা হইলে তিনি অনধিক ২ দুই বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক [৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ধারা ৬ লঙ্ঘনের দন্ড।- যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৬ বিধান লঙ্ঘন করিয়া ইট ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ধারা ৭ লঙ্ঘনের দন্ড। – যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৭ বিধান লঙ্ঘন করিয়া ইট ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসাবে নির্ধারিত মানমাত্রার অতিরিক্ত সালফার, অ্যাশ,মারকারি বা অনুরুপ উপাদান সম্বলিত কয়লা ব্যবহার করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক [১ (এক লক্ষ) টাকা অর্থদণ্ড দন্ডে দণ্ডিত হইবেন।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, এ বি এম ব্রিকস এর মালিক ১। মোঃ রোছমত আলী
২। মোঃ দরবেশ আলী
সরকারি আইন অমান্য করে অবৈধ ইটের ভাটা স্থাপন করেছেন যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এই ইট ভাটার মালিক অবৈধ ভাবে কৃষি জমি, সরকারি খাস জমি ও অবৈধ মধু মতি মঢডল টাউনের থেকে মাটি কেটে পাহাড় সমান টিলা দিয়ে স্তূপ করে রেখেছে। একশ্রেণির রাজনৈতিক নেতারা, অসাধু লোকেরা এখন অবৈধ মধুমতির সরকারী খাস জমির মাটি কেটে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এ সুযোগে ইট ভাটার মালিকেরা চোরা মাটি পেয়ে স্তূপ করে রাখছে।

ভাকুর্তা এলাকার কৃষকরা বলেন…এই ইট ভাটার ধূয়াও ধুলোর জন্য আমাদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ইট ভাটার চার পাশে সবই ত্রি ফসলী কৃষি জমি, এখানে সারা বছর কৃষি জমি চাষ করে খাই আমরা। যেমন- ধান চাষ,শস্য, লাল শাক,পালন শাক,লাউ শাক,গাজর,মূলা শাক শীতকালীন সব ধরনের শাক সবজি চাষ করি আমরা। প্রায় সারা বছর ই ঢাকা শহরে কাঁচা শাক সবজি বিক্রি সংসার চলে আমাদের। তাই আমরা এই ইট ভাটা চাইনা।

এই ইট ভাটার পাশেই রয়েছে বসতি বাড়ি ঘর, রহিমা আফরোজ এর অনুদানের কিন্ডারগার্টেন, কৃষি গ্রোফ কোম্পানির গরুর ফার্ম।
এর পাশেই আছে ভাকুর্তা হিন্দু পাড়া শত শত বাড়ি ঘর।
ইট ভাটার অতি নিকটে ই আছে ভাকুর্তা ইউনিয়নের কলেজ,ভাকুর্তা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাইমারি স্কুল, মসজিদ, ভাকুর্তা ইউনিয়ন পরিষদ, ভাকুর্তা পুলিশ ফাঁড়ি।
ভাকুর্তা এলাকার জনগণ বলেন…..ইট ভাটার ভাড়ি যানবাহন চলতে চলতে রাস্তা গুলো ধূলো বালি,ধূয়া আর বৃষ্টি এলে কাদায় রাস্তা এমনভাবে নষ্ট করে যে, স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী ও সাধারণ মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ইটের ভাটার ধূয়া ও ধুলায় এলাকার মানুষ রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। ভাকুর্তা এলাকার মানুষের দিনের পর দিন রোগ বালাই লেগেই থাকে। যেমন- শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের রোগ, সর্দি,কাশি, জ্বর, ঠান্ডা, আর শিশু বাচ্চাদের টনসিল।
ভাকুর্তা এলাকার স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক ও কৃষক সর্বস্তরের মানুষ এই ইট ভাটা অপসারণের দাবি জানাচ্ছে। সুস্থ, নির্মল, সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে বাঁচতে চাই।

আরো পড়ুন

এস এন্ড এফ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

Developer Design Host BD