মহামারী করোনায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুসংবাদ শুনতে হচ্ছে।জীবন খাতার অনেক প্রিয় মুখ,প্রিয় মানুষ চলে যাচ্ছেন না ফেরার দেশে। সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি শোক সংবাদ আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।ওলামা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক প্রচার সম্পাদক, রাজপথের পরীক্ষিত,শহীদ জিয়ার আদর্শের অনুসারী,প্রিয় মুখ দ্বীন মোহাম্মদ কাসেমী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীরা তার মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং দলের জন্য তার অবদানের অনেক কথাও বলেছেন।তার হঠাৎ করে চলে যাওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে অনেক কষ্ট পেয়েছি, তবে আজকে শুধুমাত্র শোক প্রকাশ না করে কিছু সত্য কথা তুলে ধরার তাগিদ অনুভব করলাম বিবেক থেকেই,সে কারণেই আমার এই লেখা।লেখাটি পড়ে যদি কেউ কষ্ট অনুভব করেন,প্রথমেই তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।কাউকে আঘাত বা কষ্ট দেওয়ার জন্য আমি এই লেখাটুকু লিখছি না।
“আমার মৃত্যুর পর আমার কবরে ফুল দিও না,
জীবদ্দশায় নিন্দা করো না”কবির এই ঐতিহাসিক উক্তি যেন দ্বীন মোহাম্মদ কাসেমী ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার জীবনের প্রতিফলন ঘটেছে। কাসেমী ভাই বেচে থাকাকালীন সময়ে দলের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে শহীদ জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে রাজপথে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন।ওয়ান-ইলেভেনের সেই দুঃসময়ে তার সাহসী ভূমিকা সবার নজর কেড়েছিল।সেই জন্য দল থেকে পুরষ্কার হিসেবে পেয়েছিলেন চলমান প্রচার সম্পাদক পদ থেকে ওএসডি করা হয়েছিল।আর মৃত্যুর পরে সাবেক প্রচার সম্পাদক পদটি ধারণ করেই কষ্ট অভিমান নিয়েই না ফেরার দেশে চলে গেলেন।তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নে তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ লিখতে চায় না বা এই বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ ও করে না।অথচ তার মৃত্যুতে অজস্র পাতা তার গুণগান লিখে নানা প্রকার স্বীকৃতি দিতে চায়।যে স্বীকৃতির খবর কোনোদিন সে জানতে ও পারবে না।বুকভরা ব্যথা নিয়ে কয়দিন আগে চলে গেলেন এডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। আমরা মৃত্যুর পর বেশি বেশি প্রশংসা না করে, সে বেচে থাকা অবস্থায় তার যোগ্যতা অনুযায়ী পদমর্যাদার লড়াইয়ে তৃণমূল নেতারা যদি পাশে থেকে সাহস দেয় তবে সে মৃত্যুর পরেও শান্তি ও স্বস্তি নিয়ে যেতে পারবেন, যে আমার পাশে কেউ ছিল।হাজার হাজার তৃণমূল নেতাকর্মীরা মামলা হামলায় জড়জড়িত হলেও তাদের পাশে কজন দাঁড়িয়েছেন।আজকে লেখাটি যখন লিখছিলাম তখন মিরপুর মাজার রোডের কাঠব্যবসায়ী ইসমাঈল হোসেন বাতেন (৬১) গতবছর এই দিনে নিখোঁজ হয়েছিল।সে ও তার পরিবার গরীব ও অসহায় বলে তাদের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি।একটি বিবৃতি দিয়েও বড় কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা বড় মানবাধিকার সংগঠন পাশে দাড়ায়নি।মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা কার জন্য রাজনীতি করি নিজেকে বড় করার জন্য। মানুষের জন্য রাজনীতি করার কথা আমরা ভুলে গেসি, মানবতার জন্য আমরা কাজ করা আমরা ভুলে গেছি।আর সে কারণেই তৃণমূলের রক্তক্ষরণ আজও চলছে।
দ্বীন মোহাম্মদ কাসেমী ভাই আপনি ওপারে ভালো থাকুন,আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুক, পারলে আমাদের সবাইকে ক্ষমা করবেন।আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুক।