ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশি তরুণ এমরান শিকদার অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন।
গত মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এমরানের বাড়িতে তার মৃত্যুর খবর পৌঁছায়
জানা গেছে, লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান এমরান।
তার স্থায়ী নিবাস মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় হরিদাসদী ইউনিয়নের মহেন্দ্রদি গ্রামে। সে এ গ্রামের মোশাররফ শিকদারের ছেলে। তার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশীরা।
এমরানের পরিবারের কাছ থেক জানা গেছে, এমরানের বাবা মোশাররফ শিকদার, মা, স্ত্রী রোকসানা বেগম ও শিশুপুত্র আব্দুর রহমান জিসান (৩) মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে খাবার খাওয়া বন্ধ করে আর্তনাদ করছেন। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা এসে তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ছেলের শোকে বাবা-মায়ের বুকফাটা আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে মহেন্দ্রদির বাতাস।
এমরানের মা বলেন, আমার কোলের সন্তানকে ভুল পথে নিয়ে মেরে ফেলেছে দালাল। আমি তার ফাঁসি চাই।
তার স্ত্রী রোকসানা বেগম বলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের মতিন দালাল আট মাস আগে আমার স্বামীকে দুবাই হয়ে রোমানিয়া দিয়ে স্থলপথে ইতালি পৌঁছে দেবেন বলে দুবাই নিয়ে যান। আমরা দালাল মতিনকে তখন ছয় লাখ টাকা দেই। কিছুদিন পর খোঁজ পাই, মতিন আমার স্বামীকে অন্য দালালের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
এরপর আমরা জমি-জমা বিক্রি করে শরীয়তপুরের আব্দুল্লাহ নামে অন্য দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা খরচ করে লিবিয়া ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এপর্যন্ত ধার-দেনা, জমি-জমা বিক্রি করে ১৮ লাখ টাকা খরচ করেছি। আমার সন্তানসহ আমি এখন নিঃস্ব।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।