চীন তার সদ্য চালু হওয়া তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে বানর পাঠানোর পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। চীনা বিজ্ঞানী ঝাং বলেছেন, মাছ এবং শামুকের মতো ছোট প্রাণীদের অধ্যয়ন করার পর ‘এখন ইঁদুর এবং বানর নিয়ে কিছু গবেষণা পরিচালিত হবে।বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাকাশের পরিবেশে বানরের প্রজনন ক্ষমতায় কোনো পরিবর্তন আসে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য এই সিদ্ধান্তে এসেছেন তারা।তবে প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে ইঁদুর এবং মানুষসদৃশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো জটিল জীবনের ধরনগুলোর ওপর এ ধরনের গবেষণা করার ক্ষেত্রে এখনো বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে।তারা বলেছেন, স্নায়ুযুদ্ধের যুগে সোভিয়েত গবেষকরা কয়েকটি ইঁদুর পেতে সক্ষম হয়েছিলেন, যেগুলো শারীরিক বাধা কাটিয়ে উঠেছিল এবং ১৮ দিনের স্পেস ফ্লাইটের সময় সহবাস করেছিল। কিন্তু তাদের গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ ছিল না এবং পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তাদের কেউ-ই বাচ্চা জন্ম দেয়নি।মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাবে প্রজনন পদ্ধতির মধ্যে কোনো পরিবর্তন দেখা যায় কিনা? সেই প্রশ্ন নিয়ে বহু দিন ধরেই ঘুরছিলেন চিনের বিজ্ঞানীরা। অবশেষে, তারা সিদ্ধান্ত নিলেন, পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণের জন্য কয়েকটি বানরকে চিনের স্পেস স্টেশনে পাঠানো হবে।এই প্রসঙ্গে বেজিংয়ের চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের এক গবেষক বলেন, ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি-সহ মহাকাশের অন্যান্য পরিবেশের সাথে কোনো জীব কীভাবে মানিয়ে নেবে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা আনতেই এই পরীক্ষা করা হবে।’কোন কোন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা উচিত, কীভাবে এই পরীক্ষামূলক গবেষণা চলবে– এ নিয়ে একটি রিপোর্টও প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মাধ্যাকর্ষণ শক্তিহীন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে বানরগুলো নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। মানসিক অবসাদের শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে তাদের।কিন্তু এই নতুন পরিবেশে তারা কীভাবে শারীরিক মিলনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে, তার গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখতে হবে। এমনকি, তাদের খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে মলমূত্র ত্যাগের গতিপ্রকৃতিও পর্যবেক্ষণ করা দরকার।উল্লেখ্য, তিয়াংগং স্পেস স্টেশনে এই মুহূর্তে তিন জন মহাকাশচারী রয়েছেন। চলতি বছরের জুন মাসে তারা স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছিলেন। বছর শেষের আগেই তারা ফিরে আসবেন পৃথিবীতে।