মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন

ইতিহাসের প্রলয়ংকারী ১২ নভেম্বর আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে /

‘ভয়াল ১২ নভেম্বর’ আজ। ১৯৭০ সালের এই দিনে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে ১০ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। উপকূলীয় দ্বীপচরসহ বহু এলাকা পরিণত হয় বিরান জনপদে।ওই ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে ভোলা এবং তৎকালীন নোয়াখালী উপকূলে। তৎকালীন নোয়াখালী উপকূলের রামগতি, হাতিয়া, সন্দ্বীপ এবং পটুয়াখালী পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। ধারণা করা হয়, সেই দুর্যোগে ভোলা জেলাতেই লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সেদিন উত্তাল মেঘনা নদী আর তার শাখা-প্রশাখাগুলো রূপান্তরিত হয় লাশের নদীতে।সেই স্মৃতি বয়ে আজও যারা বেঁচে রয়েছেন কিংবা স্বজনদের হারিয়েছেন, কেবল তারাই অনুভব করেন সেদিনের ভয়াবহতা। সত্তরের সেই ভয়াবহ সাইক্লোনের স্মৃতিচারণে ভোলার দৈনিক বাংলার কণ্ঠ সম্পাদক এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দেখেছি সাপ আর মানুষ দৌলতখানের চৌকিঘাটে জড়িয়ে পড়ে আছে। স্নেহময়ী মা তার শিশুকে কোলে জড়িয়ে পড়ে আছে মেঘনার পাড়ে। সোনাপুরের একটি বাগানে গাছের ডালে এক মহিলার লাশ ঝুলছে। এমনিভাবে মনপুরা, চরফ্যাশন, লালমোহন, তজুমুদ্দিন ও দৌলতখানসহ সমগ্র জেলায় মানুষ আর গবাদিপশু বঙ্গোপসাগরের উত্তাল পানিতে ভেসে গেছে। জনশূন্য হয়ে পড়েছিল দ্বীপ ভোলা।’এই ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসের পর মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধ্বংসযজ্ঞ ও বেদনাহতদের দেখতে যান, এসব দৃশ্য দেখে শোকবিহ্বল হয়ে পড়েন।প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম এম সানাউল্লাহ্ নূরী তখন দৈনিক বাংলায় (প্রাক্তন দৈনিক পাকিস্তান ) সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি লেখেন, আমরা চর বাদাম, চর সীতা এবং চর জব্বরে ধানক্ষেতগুলোতে নাকেমুখে লোনা পানি লেপ্টানো হাজার হাজার লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেছি। সাগরে ভাসতে দেখেছি অসংখ্য লাশ। রামগতি, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ভোলা ও পটুয়াখালী পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে। গোটা উপকূল অঞ্চলে প্রায় অর্ধকোটি লোক মৃত্যুবরণ করেছে। ১২৮৩ সালের গোর্কির চেয়ে বহুগুণে করুণ এবং ভয়াবহ ছিল ’৭০ সালের গোর্কি।জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এ ঘূর্ণিঝড়কে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উল্লেখ করেছে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে ১৩ নভেম্বর ভোর পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছিলো।

আরো পড়ুন

এস এন্ড এফ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

Developer Design Host BD