ঢাকার সাভারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া এ জমিতে ঢুকে মাদক সেবনেরও অভিযোগ উঠেছে।আজ সরেজমিনে পৌরসভার ব্যাংক কলোনি কলেজ রোডের তালবাগ এলাকায় ওই জমিতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারাও এসব তথ্য জানিয়েছেন।জানা যায়, সাভার উপজেলার ছোট বলিমেহের মৌজার সিএস ও এসএ ৬৩ নং দাগের আরএস ১৬৯ এর ৩৫৩৮ নং দাগের ৪.৩৩ শতাংশ জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। সম্প্রতি কেনা সূত্রে ওই সম্পত্তির দাবিদার রফিকুল ইসলাম ঢাকা জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা (২৩১/২০২২) দায়ের করেন। এতে গত ২২ আগস্ট ঢাকা জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. নাজমা নাহারের আদালত ওই সম্পত্তিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন ও পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত যার যার অবস্থানে থাকতে বলেন। জমিটির বিষয়ে শুনানির জন্য সব কাগজপত্রসহ আগামী ২৬ ডিসেম্বরে (২০২২) আদালতে দুই পক্ষকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।তবে গত ২১ নভেম্বর থেকে সকালের দিকে বিবাদী মো. মাসুম প্রায় ১০-১২ জন লোকসহ ওই জমিতে জোরপূর্বক নির্মাণকাজ শুরু করেন। সেখানে জমি মালিক রফিকুল ইসলাম নিজে ও পরে পুলিশ ডেকে এনেও তাদের থামাতে পারেননি। পরে তিনি সেদিন রাতেই সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।বাদী রফিকুল ইসলাম ধামরাইয়ের কায়েতপাড়া এলাকায় মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। বিবাদীরা হলেন- ধামরাই উপজেলার কায়েতপাড়া এলাকার মৃত নাজির হোসেনের ছেলে আজিজুর রহমান পলাশ (৩৫), মেয়ে নাজমা আক্তার শিল্পী (৩০), ফরিদা ইয়াসমিন শিউলি (২৫) এবং মো. মাসুম (৩৮)। মাসুম ধামরাই উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক।এদিকে রফিকুল ইসলাম জমিটি সাভার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের তালবাগ এলাকার বাসিন্দা এসএম জাহেরুল আহসান ও মনির হোসেনের কাছে বিক্রি করেছেন। তবে বিরোধ থাকায় জমিটিতে যেতে পারছেন না নতুন মালিকরা। এছাড়া অবৈধ কর্মকাণ্ডে বিব্রত তারা।স্থানীয়রা জানান, দখলদার মাসুম নিজের সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে ওই জমিতে ঢুকে জুয়া খেলা, মাদক গ্রহণসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। বাইরে থেকে কেউ এলেই তারা সচেতন হয়ে যান। এজন্য কয়েকদিন আগে বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরাও স্থাপন করেছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, আমি তো জানি গেঞ্জামের পরে পুলিশ আসছিলো, পুলিশ আইসা কাজ বন্ধ করে রেখে গেছিলো। এর পরের দিনও চাল লাগায়া কাজ করছে। এর পরেও কাজ করেছে। পুলিশ নাম নিষেধ করার পরেও তালা ভাইঙা কাজ করছে। এছাড়া তারা দোকানে ঢুকে নেশা করে। পুলিশ যাতে না ধরতে পারে তাই ক্যামেরা লাগাইছে।আরেক দোকানদার বলেন, আমার জানা নতে ফারুক ভাইরা জমিটা পাবে। পুলিশ এসে দুপক্ষকেই কাজ করতে মানা করার পরেও কই থেকে বিএনপির নেতা এসে সন্ত্রাসের মত লোকজন দল পল নিয়ে এসে ফারুক ভাইয়ের জায়গায় তালা ভেঙে ভাঙচুর করে কাজ করছে। এখন সেই জায়গা হয়ে গেছে মাদকসেবীদের আস্তানা।জমির মালিক এসএম জাহেরুল আহসান বলেন, জমিটির রেকর্ডীয় মালিক রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে জমিটি কিনেছি আমি। সব কাগজপত্রও আছে, সেগুলো আদালতকে দেখিয়েছি। তবুও বিবাদীরা দখলের চেষ্টা করায় আমরা আদালতে মামলা করি। মামলাটি তদন্ত চলছে ও পরবর্তী শুনানির আগ পর্যন্ত বর্তমান অবস্থায় থাকার কথা। কিন্তু বিবাদীরা আরও ১০-১২ জনকে নিয়ে আজ সকালে নির্মাণ সামগ্রী এনে কাজ শুরু করে। এতে বাঁধা দিতে গেলে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে আমি থানা পুলিশে খবর দেই। পুলিশ এসে নিষেধ করলেও তারা সেটা মানেনি। তারা আইন আদালত কিছুই মানছে না। এখন ওই জমিতে তারা নানা অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা চাচ্ছি।এ বিষয়ে সাভার থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) নয়ন কারকুন বলেন, এটি আদালতে বিচারাধীন। বিষয়টিতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।