মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

অস্বাস্থ্যকরভাবে গরুর গোশত বিক্রির সংবাদ সংগ্রহ করায় গণমাধ্যমকর্মীকে ‘হুমকি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ২২৭ বার পড়া হয়েছে /
বা থেকে হুমকি দাতা জুয়েল আহমেদ ও সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম অনিক

অস্বাস্থ্যকরভাবে গরু গোশত বিক্রি করার খবর সংগ্রহ করায় এক গণমাধ্যম কর্মীকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।এ নিয়ে সাভারে সাংবাদিক অঙ্গনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাৎক্ষণিক প্রতিবাদও করেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এশিয়ান টিভির সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম অনিক জানতে পারেন মানিকগঞ্জের সিংগাইরে জামাতা ইউনিয়নে গরু জবাই করে তা অস্বাস্থ্যকর ভাবে অটোরিক্সায় করে বিক্রির জন্য আনা হচ্ছে হাজি বাসার সুপার মার্কেটের কসাইখানায়। যার নেপথ্যে রয়েছেন ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জুয়েল আহমেদ। তিনি তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হাজি বাসার সুপার মার্কেটের মালিকের ছেলে।

পায়ের নিচে রেখে আনা হচ্ছে মাংশ।

ভূক্তোভোগী সাংবাদিকের ধারণকৃত একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, হাজি বাসার সুপার মার্কেটের কসাই খানার দুই কসাই গরু কেটে তা অটোরিক্সায় কোনো পলিথিন ছাড়া পায়ের নিচে রেখে নিয়ে আসছেন ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে।

এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ায় ভুক্তভোগী গণমাধ্যম কর্মীকে মুঠোফোনে হুমকি দেয় অভিযুক্ত জুয়েল আহমেদ।

হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদুল ইসলাম অনিক বলেন, আমি বেশ কিছুদিন যাবত জুয়েল আহমেদের চাঁদাবাজী, জুয়ার আসর এবং কসাইখানায় অসুস্থ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গরুর গোশত বিক্রির অভিযোগ শুনে আসছিলাম। তারই সূত্র ধরে জানতে পারি সিংগাইরে একটি গরু জবাই করে অস্বাস্থ্যকরভাবে ভ্যানে করে উন্মুক্ত অবস্থায় গোশত নিয়ে আসছে হাজী বাসার সুপার মার্কেটের কসাইখানায়। এরপর রাস্তায় কসাইয়ের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সামনেই জুয়েল আহমেদকে মুঠোফোনে কল দেন সেই কসাই। এরপর মুঠোফোন আমাকে দেয়া হলে আমাকে বেশি বাড়াবাড়ি করলে দেখে নেয়ার হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন চাঁদাবাজ এই নেতা।

এলাকা সূত্রে জানা যায়, কসাইখানায় অস্বাস্থ্যকরভাবে গরু বিক্রি করা ছাড়াও অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সাবেক এই সহ-সভাপতি ক্যারাম বোর্ডের মাধ্যমে জুয়ার আসর পরিচালনা এবং চাঁদাবাজীর অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার মার্কেটে ভিতরে প্রতিনিয়তই চলছে ক্যারাম বোর্ড দিয়ে জুয়ার আসর এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেকেই, মাঝখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েল আহমেদ। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এই বিষয়ে বেশ কয়েকবার পদক্ষেপ নিয়ে জুয়ার আসর বন্ধ করলেও আবারো চালু করা হয়।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিপুল হারে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ। এলাকাটি গার্মেন্টস শিল্প এলাকা হওয়ায় পদ্মার মোড় থেকে যমুনা গার্মেন্টসের মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা শাকসবজি বিক্রি করতে দেখা যায় অসংখ্য ব্যবসায়ীকে।এজন্য পদ্মার মোড় থেকে যমুনা গার্মেন্টস পর্যন্ত যানজট সবসময় লেগেই থাকে।

ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন জুয়েল আহমেদের নেতৃত্বে মাইনুল নামের একজনকে দিয়ে দোকান প্রতি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা আদায় করা হয় প্রতিদিন। এছাড়াও জমাকৃত এডভান্স স্বরূপ ছোট দোকান থেকে ৩০০০ ও বড় দোকান থেকে ৫০০০ টাকারও নেয়ার অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে প্রশাসন বেশ কয়েকবার ব্যবস্থা নিলেও কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবারও এই প্রভাবশালী নেতা পুনরায় চালু করে দেন এই বাজার। আর রমরমা হয়ে ওঠে তার চাঁদাবাজীর ব্যবসা।

এদিকে এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সাভার উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং পেশাদারি দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বলে আমি মনে করি।

আরো পড়ুন

এস এন্ড এফ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

Developer Design Host BD