পাকিস্তানে বড় ধরনের বিপর্যয়ের কারণে সোমবার সকাল থেকে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে পুরো পাকিস্তান। রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে শুরু করে লাহোর, করাচি, কোয়েটা, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ার কোথাও বিদ্যুৎ নেই।ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৩ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশে প্রায় ২২ কোটিরও বেশি দুর্ভোগে পড়েছে। জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ফের চালু হতে ১২ ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের বিদ্যুৎমন্ত্রী খুররম দস্তগীর।পাকিস্তানের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৪৩ মিনিটে ফ্রিকোয়েন্সি ওঠানামার কারণে জাতীয় গ্রিড ভেঙে পড়েছে। এতে করে দেশের বিরাট এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎব্যবস্থা পুনর্বহালে কাজ চলছে।বিদ্যুৎ বিপর্যয় ‘বড় কিছু নয়’ মন্তব্য করে জিও নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী খুররম দস্তগীর বলেছেন, শীতের সময় সারা দেশে চাহিদা কমে যায় দেখে আমরা সাশ্রয়ের কথা ভেবে রাতের বেলা বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখি। আজ সকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন সিস্টেম পুনরায় চালু করলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দাদু জামশোরোর মাঝামাঝি কোনো জায়গায় ফ্রিকোয়েন্সি ভেরিয়েশন ও ভোল্টেজ ফ্লাকচুয়েশন দেখা যায়। এ কারণে একের পর এক বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়।তিনি বলেন, পেশোয়ার ও ইসলামাবাদে গ্রিড স্টেশন পুনর্বহাল শুরু হয়েছে। এ মর্মে নিশ্চয়তা দিতে পারি যে আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে সারা দেশে বিদ্যুৎ পুনরায় চালু হবে।কোয়েটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির মুখপাত্র মুহাম্মদ আফজাল ডনকে বলেছেন, প্রদেশের তিনটি সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি দেখা গেছে। এর ফলে বেলুচিস্তানজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। ত্রুটি দেখা দেওয়া তিনটি সঞ্চালন লাইন হচ্ছে-২২০ কেভি উচ-সিব্বি, ২২০ কেভি দাদু-খুজদার এবং ২২০ কেভি ডেরা মুরাদ জামালি।ডন বলছে, বেলুচিস্তানের ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে-রাজধানী কোয়েটা, পিশিন, কিল্লা আবদুল্লাহ, চমন, লোরালাই ঝাব, কিল্লা সাইফুল্লাহ, মাস্তুং, সিব্বি, জিয়ারাত, কালাত এবং খুজদার।মুহাম্মদ আফজাল আরও বলেছেন, ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডেসপ্যাচ কোম্পানির (এনটিডিসি) মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে।রাজধানী ইসলামাবাদে ব্রেকডাউনের প্রভাব প্রায় ১১৭টি গ্রিড স্টেশনের ওপর পড়েছে বলে ইসলামাবাদ ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির মুখপাত্র জানিয়েছেন।পাকিস্তানের প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের সিংহভাগ তেল-গ্যাস থেকে উৎপাদন হয়। গত বছর থেকে বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাসের দাম বেড়েছে। এদিকে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। এ অবস্থায় দেশটির পক্ষে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে পাকিস্তান সরকার চলতি মাসের গোড়ার দিকে শপিং মল ও মার্কেট আগে বন্ধ করার নির্দেশনা জারি করেছে।