জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব চরম আকারে ছড়িয়ে গেছে। জাতিসংঘে কাশ্মীর ইস্যুতে বুধবার (২ মার্চ) ভারতের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়েছিলেন পাকিস্তানি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার। আর শুক্রবার (৩ মার্চ) হিনার বক্তব্যের সমালোচনা করে তাকে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা বলে উল্লেখ করেছে ভারত। আর তাতেই দুই দেশের মধ্যকার দ্বন্দ্ব জাতিসংঘে চরম আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
সেদিন জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে পাকিস্তানকে নিজেদের দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রতিনিধি সীমা পুজানি।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গত বুধবার ভিডিও লিঙ্কে জেনেভাভিত্তিক মানবাধিকার পরিষদে যুক্ত হন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। সে সময় তিনি অভিযোগ করেন, ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার রাজনৈতিক সুবিধাকে ব্যবহার করে কাশ্মীরি জনগণের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে। তাদের অধিকার আদায়ের ন্যায্য লড়াইকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে তুলনা করছে।
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারের পতাকাধারীদের অসহনীয় নীরবতা ভারতকে কাশ্মীরি তরুণ-তরুণীদের হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতনে উৎসাহিত করছে।’
৪৭ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদের ৫২তম অধিবেশনে হিনা মানবাধিকার কাউন্সিলকে কাশ্মীরে ভারত সরকারের কাঠামোগত মানবাধিকার হরণের পূর্ববর্তী দুই প্রতিবেদনের আপডেট প্রকাশ করার তাগিদ দিয়েছেন।
গত শুক্রবার মানবাধিকার পরিষদে ভারতের প্রতিনিধি সীমা পুজানি হিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের জনগণ যখন নিজেদের জীবন, জীবিকা ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে, তখন ভারতকে নিয়ে তাদের মাথাব্যথার মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, রাষ্ট্রটি তাদের অগ্রাধিকারের জায়গাগুলো গুলিয়ে ফেলেছে। আমি দেশটির নেতা ও কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেব তারা যেন ভিত্তিহীন প্রচারণা না চালিয়ে নিজেদের জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করেন।’
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে মানবাধিকার পরিষদে তুর্কি প্রতিনিধি ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) যে মন্তব্য করেছে, তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সীমা পুজানি। তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয় নিয়ে তুর্কি প্রতিনিধি যে মন্তব্যগুলো করেছেন, তা নিয়ে আমরা মর্মাহত। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত রাখার পরামর্শ দিচ্ছি তাদের।’
সীমা পুজানি বলেন, ‘কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরকে ওআইসির বিবৃতিতে যেভাবে অযৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। বাস্তবতা হলো, কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের গোটা এলাকা ভারতের অংশ ছিল, আছে এবং চিরকাল তা-ই থাকবে। বেআইনিভাবে ভারতের অঞ্চল দখল করে রেখেছে পাকিস্তান। ওআইসি তাদের সদস্য দেশ পাকিস্তানকে রাষ্ট্রের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ বন্ধ এবং ভারতীয় ভূখণ্ড দখল থেকে সরে আসার আহ্বান জানায়নি। বরং ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ অপপ্রচারে লিপ্ত হওয়ার ঘৃণ্য এজেন্ডা বাস্তবায়নে পাকিস্তানকে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম অপব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে ওআইসি।’