কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান গাওয়ার সময় ‘অসংলগ্ন’ আচরণ করেছেন কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল। এতে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা তাঁর দিকে পানির বোতল ও জুতা ছুড়ে মেরেছেন। এ ঘটনায় ওই অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে। নোবেল ‘নেশাগ্রস্ত’ হয়ে মঞ্চে ওঠায় এমন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
মঞ্চে উঠে শিল্পী নোবেলের অসংলগ্ন আচরণ ও দর্শকদের জুতা ছোড়ার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, মঞ্চে উঠে নোবেল প্রথমে তাঁর চশমা খুলে পাঞ্জাবির কলারে রাখেন। তারপর তিনি দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘দ্বিতীয়বার কুড়িগ্রাম আসলাম। এর আগেও কুড়িগ্রাম এসেছিলাম তোমাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। এবার দেখা হলো আলহামদুলিল্লাহ।’ এরপর তিনি তাঁর চশমা খুঁজতে থাকেন আর চিৎকার করে বলেন, ‘আমার চশমা কই।’ পরে পাঞ্জাবির কলার থেকে চশমা নিয়ে চোখে দেন এবং একটি গান পরিবেশন করেন।
গান শেষে দর্শকেরা যখন উল্লাস করছিলেন, তখন নোবেল তাঁদের চুপ থাকতে বলে মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ড আছড়াতে থাকেন এবং ভেঙে ফেলেন। এরপর তিনি গান ধরেন ‘কারার ওই লৌহ কপাট’। গানের একপর্যায়ে টলতে টলতে বসে পড়েন নোবেল। এ সময় দর্শকেরা ক্ষেপে গিয়ে পানির বোতল ও জুতা দিয়ে ঢিল ছুড়তে থাকেন। পরে মঞ্চে থাকা আয়োজকদের কয়েকজন এসে নোবেলকে সরিয়ে নিয়ে যান।
সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ছিলেন ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, ঐতিহ্যবাহী এ কলেজের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। দুই দিনব্যাপী এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে গান গাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়।
আমিনুল ইসলাম বলেন, রাত ৯টায় নোবেলের মঞ্চে ওঠার কথা থাকলেও নেশাগ্রস্ত থাকায় ১১টা ২০ মিনিটে গান গাইতে ওঠেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি দর্শকদের সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন। এতে দর্শকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে পানির বোতল ও জুতা দিয়ে ঢিল ছোড়েন। পরে আয়োজকদের পক্ষ থেকে তাঁকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনা হয় এবং তাঁকে ঢাকায় ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তিনি বলেন, ‘এত বড় মাপের একজন শিল্পী এভাবে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মঞ্চে উঠবেন আমরা আয়োজকেরা ভাবতে পারিনি। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আমরা অনুষ্ঠানে আগত দর্শক ও সুধীজনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’