ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়ক জায়েদ খান। তবে চলচ্চিত্র সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি যতটা না আলোচনায় থাকেন, তার চেয়ে বেশি থাকেন বিভিন্ন বিষয়ে তার মন্তব্যের কারণে। আর এসব মন্তব্যের বেশিরভাগ নারীকেন্দ্রিক। যদিও জায়েদ খানের দাবি, তিনি সহজ-সরল বলে সব কথা অকপটে বলেন। তবে নেটিজেনদের অনেকেরই অভিযোগ, শুধুমাত্র আলোচনায় থাকার কৌশল হিসেবেই এই পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি “ঢালিউড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড” আসরে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এই সাবেক সাধারণ সম্পাদক। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে তিনি বলেছিলেন, নিউইয়র্কের ২৫ মেয়ে একসঙ্গে হয়ে তাকে ভিডিও কল দিয়েছেন। দাবি করেন, তার যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা উন্মুখ হয়ে আছেন।
তবে ২৫ জুন নিউইয়র্কের জ্যামাইকার অ্যামাজুরা মিলনায়তনে মঞ্চে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় জায়েদ খানকে। দর্শকদের “ভুয়া ভুয়া” চিৎকারে দ্রুত তাকে মঞ্চ ত্যাগ করতে হয় বলেও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রে “ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি রিসার্চ” এবং “হিউম্যানিটারিয়ান ফোকাস ফাউন্ডেশন” নামে দুটি সংস্থার কাছ থেকে যৌথভাবে “দ্য হিউম্যানিটারিয়ান লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড” ও “গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর” হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার খবরে ফের বিতর্কিত হন জায়েদ খান।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে জায়েদ খানের বরাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই দুটি সংস্থার সঙ্গে জাতিসংঘের কোনো সংশিষ্টতা নেই। তবে সেটি নিয়েও বিরক্ত হন জায়েদ খান। অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তিতে “খুশি না হওয়ায়” দেশের মানুষের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
এরপর থেকে কিছুটা আড়ালেই ছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর খুব একটা মিডিয়ার সামনে দেখা যায়নি তাকে। তবে “কে কী বললো” তাতে “কিছু মনে না করা” জায়েদ খান খুব বেশি দিন আড়ালে থাকতে পারলেন না। নীরবতা ভেঙে আসলেন সামনে। আর এসেই ফের “লাগামহীন” মন্তব্যে নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন। অনেকেই তাকে নিয়ে ফের হাস্যরসে মেতে উঠেছেন।
নতুন এই বিতর্ক সম্প্রতি শুরু হওয়া “নারী কীসে আটকায়” সংক্রান্ত একটি ভাইরাল পোস্টকে ঘিরে। “পৃথিবীর ধনী, ক্ষমতাধর, সুদর্শন পুরুষরা যখন তাদের সঙ্গীদের আটকে রাখতে পারছেন না” এমন একটি বিতর্কিত বিষয় নিয়ে এই প্রশ্নের অবতারণা।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় যোগ দিয়েছেন বিনোদন জগতের অনেকে তারকারাও। তবে অন্য কারও মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক না হলেও, বিতর্ক জায়েদ খানের পিছু ছাড়েনি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে জায়েদ খানকে।
নারীরা কীসে আটকায়- এমন প্রশ্নের জবাবে এই নায়কের ভাষ্য, এখন নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে, নারীরা জায়েদ খানে আটকায়।
জায়েদ খান বলেন, “আমি আগেই বলেছি, সুন্দরী নারীরা জায়েদ খানে আটকায়। এবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে আবারও তার প্রমাণ পেয়েছি। সব ছেলেরা আমার পোস্টে ব্যাড কমেন্টস করেছেন। তেমন এক স্বামী আমার পোস্টে বাজে কথা লিখেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর তার স্ত্রী আমার ইনবক্সে এসে বলেন, ‘ভাইয়া, কিছু মনে করবেন না। বাসায় শুধু আপনার কথা বলি, তাই আমার স্বামী বাজে মন্তব্য করেছেন।”
জায়েদ খান আরও বলেন, “আমেরিকায় দেখেছেন, হাজার হাজার মেয়ের মধ্যে আমি একা বসেছিলাম। ওখানে গিয়েও আটকেছি।”
তিনি বলেন, “আসলেই আমি সরল। সরল না হলে কি ইনবক্সের কথা কেউ বলে। মেয়েদের কথা কেউ বলে। আমার চেয়েও অনেকের বেশি মেয়ে বন্ধু আছে, ডেটিংয়ে ঠিকই যায়। কেউ কী বলে। আমি বললেই ধরা।”
জায়েদ খান জানান, নারীরা তাকে নিয়ে কখনো বাজে মন্তব্য করেন না। করে শুধু ছেলেরা। কারণ ছেলেরা তাকে নিয়ে ঈর্ষা করে।
তিনি বলেন, “এবার আমেরিকায় গিয়ে আমার বন্ধুরা বলেছে— তুমি শুধু ছেলে ফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা বলবা। মেয়ে ফ্রেন্ডদের সঙ্গে বলবা না।”
জায়েদ খানের এই বক্তব্য সংক্রান্ত ভিডিওটি রীতিমত ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়। অনেকেই সেটি শেয়ার করছেন, করছেন নানা মন্তব্যও। তবে তার বেশিরভাগই হাস্যরসে ভরা!