নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে অস্ত্র সংগ্রহ করছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রদলের ছয় নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি’র যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী।
তিনি বলেন, ‘গতকাল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ছাত্রদলের ছয়জন নেতাকে গ্রেপ্তার করে লালবাগ ডিবির গুলশান বিভাগ। তাদের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র জব্দ করা হয়। অস্ত্রগুলোর মধ্যে দুটি পাবনা ও একটি টেকনাফ থেকে সংগ্রহ করেন তারা।’
খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে তারা অস্ত্র সংগ্রহ করে এই পরিকল্পনা করছিলেন। তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথপোকথনের সূত্রে কাদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে সেই তথ্য জানা গেছে। অস্ত্র সরবরাহকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন‒ ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে জিসান (৩১), ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো.আরিফ বিল্লা (৩০), ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান ওরফে হাসান (৩২), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন (৩১), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (৩২) ও ছাত্রদলের ঢাবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ (২৯)। তাদের কাছ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
তাদের গ্রেপ্তার সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে আমরা কয়েকটি মোবাইল জব্দ করেছি। তাদের মোবাইলেও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া উদ্ধারকৃত অস্ত্রের ছবিও মোবাইলে পাওয়া গেছে। যাদের কাছে থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করেছে তাদের নাম-ঠিকানাও পেয়েছি। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা আগামী নির্বাচনে সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে এই অস্ত্র সংগ্রহ করেন। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। আজ আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। এতে আরও অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হবে।’
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় শুক্রবার এই ছাত্রদলের নেতাদেরকে ডিবি তুলে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘মামলার এজাহারে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সেভাবেই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’