সিরাজগঞ্জ শহরে অবস্থিত দুইটি সরকারী হাসপাতালে বেশ কিছুদিন যাবত রোগীদের স্যালাইন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগী আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে। তাই স্যালাইন সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বাইরের ফার্মেসীগুলোতে এসব স্যালাইন দুই থেকে তিনগুন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই চড়া দামেই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে স্যালাইনের বাজার নিয়ন্ত্রনে ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করছে।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ শহীদ এম, মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতাল এবং সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল সরজমিন ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত সিরাজগঞ্জ শহীদ এম, মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের ৪৩ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন শহরের জানপুর মহল্লার বেবি খাতুন জানান, ৬দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি, এ পর্যন্ত ৪টি স্যালাইন দিতে হয়েছে। সবগুলোই বাইরের ফার্মেসী থেকে থেকে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা করে কিনে আনা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে কোন স্যালাইন দেয়নি।
একই হাসপাতালের ভর্তি হয়েছেন কামারখন্দ উপজেলার চটিবাড়ি গ্রামের কবিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিনদিন হলো হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ৯০ টাকা দামের স্যালাইনের প্যাকেট বাইরের ফার্মেসীগুলো একেক সময় একেক দাম নিচ্ছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।
বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম, মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের পরিচালক ডা: সায়ফুল ফেরদৌস মুহাঃ খায়রুল আতাতুর্ক জানান, বর্তমানে হাসপাতালে ১৪জন রোগী ভর্তি আছে। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় নরমাল ও হার্ডম্যান সলিওশন স্যালাইন প্রয়োজন। সরকারী ভাবে সরবরাহ বন্ধ থাকায় এসব স্যালাইন রোগীদের মাঝে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগে এ বিষয়ে পত্র দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত বিষয়টি সমাধা হবে।
অপরদিকে, সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের অবস্থাও একই। মঙ্গলবার এ হাসপাতালে ১৫জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন।
এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শহরের নতুন ভাঙ্গাবাড়ি মহল্লার মিতু খাতুন। তার স্বামী স্বপন খান জানান, হাসপাতালে স্যালাইন সাপ্লাই নেই, যে কারনে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। প্যাকেটের গায়ে ১০১ টাকা দাম লেখা থাকলেও ফার্মেসীগুলো প্রতি প্যাকেট স্যালাইন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দাম নিচ্ছে। উপায় নেই তাই বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে।
একই হাসপাতালের ভর্তি হয়েছেন সদর উপজেলার সয়দাবাদ গ্রামের বুদ্দু মোল্লা। তিনি বলেন, বাইরে থেকে ২০০ টাকা করে স্যালাইন কিনে এনে ব্যবহার করছি। রক্ত পরীক্ষাও বাইরে থেকে করেছি। তাহলে সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে লাভ কি। সরকারী কোন সেবা তো পাচ্ছি না।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডাঃ রতন কুমার রায় জানান, বেশকিছু দিন সরবরাহ বন্ধ থাকার পর সোমবার ২০০০ প্যাকেট স্যালাইন বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছে। সংকট এখনও কাটেনি। তাই চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।