মনে আছে তো, শৈশবের সেই রোমাঞ্চকর অম্স্নান স্মৃতিগুলোর কথা? হ্যা, একটু ভাবতেই দু’চোখের সামনে ভাসছে সেই স্মৃতির ডায়রি। শৈশবে শীতের বাড়ন্ত সবজি চুরি করে , নিজেদের ঘর থেকে মুঠো ভর্তি করে চাল-ডাল, তেল-নুন, পেঁয়াজ, লবণ এনে এক সাথে জড়ো করা ‘জোলাভাতি’ আয়োজনের জন্য। সবাই মিলে কেটে কুটে রান্না করে কলা পাতায় খাওয়ার এই আয়োজনের কথা স্মৃতি পটে ভেসে আসে গোধূলি লগ্নের স্নিগ্ধ বিকেলের মতো সুন্দর হয়ে।
শৈশব-কৈশোরের হাজারো সুমধুর স্মৃতির মধ্যে অন্যতম জায়গা জুড়ে আছে পাড়ার খেলার সাথীদের নিয়ে হৈ-হুল্লোড় করতে করতে আয়োজন করা ‘জোলাভাতি’। জায়গাভেদে এই আয়োজনকে ‘চুড়ুইভাতি’ও বলা হয়ে থাকে।
পুরোনো স্মৃতি আরেকটু শাণিত করতেই গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস) একাদশ কমিটি প্রথমবারের মতো ‘জোলাভাতি’র আয়োজন করে।
নির্ধারিত দিনে সকাল সকাল বাজার সদাই করার জন্য ব্যাগ হাতে বেড়িয়ে পড়েন শোভন, আখলাক ও বিজয়। বাজার আসতেই পরে যায় কাজের মহাধুম। কেউ কেউ কাটাকুটি তে, কেউ বা আবার হাড়ি-পাতিল পরিষ্কারের কাজে লেগে যায়। এরই মাঝে গানের সুর তোলে নিরব ও তাহমিদ। গানের সুরে যেন কাজের গতি বেশ খানিকটা বাড়িয়েই দেয়।
নিজের রন্ধনশৈলী গুণ নিয়ে এগিয়ে আসে ইউনুস। গান-গল্প আড্ডা ও ছবি তোলার তালে তালে এগোতে থাকে রান্না। এসময় দূরন্ত কিশোরের মতো সাইকেল নিয়ে ছুটতে দেখা যায় পিংকি, মিমি ও শরিফুলকে।
এরই মধ্যে এসে পৌছায় গবিসাসের আজীবন উপদেষ্টা সিহাব ভাই, ভাবি ও আমাদের সবার প্রিয় স্বচ্ছ। শেষ বিকেলের আগ মুহুর্তে শেষ হয় রান্না। মিডিয়া চত্বরে সবাই সেরে নেয় খাবার পর্ব। খাওয়াদাওয়া শেষে শুরু হয় গান-গল্পের আসর। আড্ডায় আড্ডায় গোধূলি লগ্নের শেষ মুহূর্তে সমাপ্ত হয় ‘জোলাভাতি’র শেষ পর্ব।
গল্প-আড্ডার পাশাপাশি চলে একে অপরের সাথে পরিচয় পর্ব। সকলের চোখে মুখে লেগে থাকা আনন্দ দেখে মনে হয় যেন পারিবারিক আড্ডায় মেতেছে সবাই। রোমাঞ্চকর এ আয়োজন শেষে সবার অনুভূতি যেন এমনই।
আয়োজন সম্পর্কে গবিসাসের সাধারণ সম্পাদক সানজিদা জান্নাত পিংকি বলেন, আমি বরাবরই দেখেছি টিমওয়ার্ক বিষয়টা আমার টিমের সবাই খুব পছন্দ করে। সবার মাঝে বন্ডিংটা আরও দৃঢ় করতে এবং একটা দিন নিজেদের মতো হেসে-খেলে কাটানোর উদ্দেশ্যেই গবিসাসের এই আয়োজন।
চৈত্রের শেষ বিকেলের রক্তিম আভা ছড়িয়ে পরেছে আকাশ জুড়ে, পাখিরা নীড়ে ফিরছে ডানা মেলে। নতুন অসংখ্য স্মৃতি নিয়ে পড়ন্ত বিকেলে ‘জোলাভাতি’র সমাপ্তি ঘোষণা দিয়ে বিষণ্ণ মনে ঘরে ফিরার প্রস্তুতি নিচ্ছে একঝাঁক তরুণ সাংবাদিক।