‘মা’ শব্দটি শুধু শব্দ নয় যেন একটা জগৎ। ‘মা’ শত কষ্ট সহ্য করে আমাদের দুনিয়ার আলো দেখান, আমাদের বড় করে তুলেন। হয়তো স্রষ্টার পক্ষে আমাদের পাশে সর্বক্ষণ উপস্থিত থাকা সম্ভব নয় বলেই ‘মা’ নামক রহমতের কাছেই আমাদের নির্বিঘ্নে ছেড়ে দেন। বছর ঘুরে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালিত হয়, তবে মায়েদের ভালবাসতে কি আদৌও বিশেষ দিবসের প্রয়োজন আছে? মা দিবস নিয়ে শিক্ষার্থী ভাবনা তুলে ধরছেন তরুণ সাংবাদিক মুনিয়া রহমান জান্নাত।
‘ মায়ের কাছে সব বলেই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচি’
একজন সন্তান হিসেবে বাবা-মায়ের প্রতি আনুগত্য কারো’ই কখনো কমে না, কমে যায় ঠিক তখনই যখন সেই সন্তান থেকে মনুষ্যত্ব ও বিবেকবোধ লোপ পায়। সেদিকে নাহয় অন্যদিন যাওয়া যাবে, আজকে কথা হবে মা ও আমাকে নিয়ে।
সাধারণ দৃষ্টিতে মায়ের সাথেই কেটেছে আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি সময়, যার কারণে মায়ের সাথে আমার বন্ধন টা স্বাভাবিকভাবেই দৃঢ়। ছোটোবেলা থেকে দেখে আসতেছি, মায়ের নি:স্বার্থ ভালোবাসা, অক্লান্ত পরিশ্রম ঠিক কীভাবে আমাদের পরিবারকে আগলে রেখেছে। একদিন হুট করে অসুস্থ হয়ে পরলে প্রায় অন্য সবার মায়ের মতোই আমার মা আমার পাশে রাতভর বসে থাকতো। কিছুক্ষণ পর পর আমার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতো, আমার কিছু লাগবে কি-না, ওষুধ বদলাতে হবে কি-না এগুলো নিয়ে তার চিন্তার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয় নি আজও। আবার, মা অসুস্থ হলে একটা পরিবার কীভাবে স্তব্ধ হতে পারে সেই অভিজ্ঞতাও আমাদের অনেকেরই আছে। দিনশেষে মায়ের কাছে সব বলতে পারলেই যেনো নিজেকে হালকা মনে হয়। একটা খারাপ দিন শেষে মায়ের কোলে শুয়েই যেনো মানসিক প্রশান্তিটুকু মেলে। সকলের কাছেই তার মা, বাবা অনন্য। কারো সাথেই কারো তুলনা হয় না। পৃথিবীর সকল মা-বাবা সুস্থ থাকুক, আমরা যেনো তাদের মতো স্নেহ দিয়েই পরবর্তী প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারি সেই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করছি।
মো: মেরাজ হোসেন
(১ম বর্ষ
মাইক্রোবায়োলজি
গণ বিশ্ববিদ্যালয়)
‘ভালবাসি তোমাকে মা’
মা, পৃথিবীর একমাত্র ব্যক্তি যিনি তার সন্তানকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেন। আমার মা খুবই সহজ সরল একজন মানুষ। তিনি আমাকে অনেক ভালোবাসেন। এখন পড়াশোনার জন্য বাহিরে থাকি আর মায়ের সাথে থাকার সুযোগ হয় না। মাকে অনেক মিস করি।মায়ের মতো করে কেউ খাওয়ার কথা, শরীরের যত্ন নেয়ার কথা বলে না।বিশেষ করে আমার এখনও মনে পড়ে আমার এক্সিডেন্ট হওয়া সেই রাতের কথা, মায়ের সেদিনের কান্না ভরা চোখের কথাটা মনে পড়লে আজও আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। এখনও অসুস্থ হয়ে গেলে মায়ের কথা সবার আগে মনে পড়ে।মাকে হয়তোবা আমি কোনোদিন বলতে পারিনি মা আমি তোমাকে ভালোবাসি। কিন্তু মা ছেলের ভালোবাসা অকৃত্রিম এবং এটা ভাষায় পরিমাপ করার মতো না। দিনশেষে একটা কথাই বলব, ভালোবাসি তোমাকে মা।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা। সবাই আমার মায়ের জন্য দোআ করবেন।
মেহেদী হাসান
(২য় বর্ষ
মেডিকেল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়।)
‘নিখুঁত ভালোবাসার নাম হচ্ছে মা’
‘মা’ শব্দটি ছোট্ট অতি তবে এর গভীরতা বিশাল। ছোট্ট এ শব্দের অতলে লুকানো থাকে গভীর স্নেহ,মমতা আর অকৃত্রিম ভালোবাসা।সন্তানেরা প্রথম বুলিই শেখে মায়ের থেকে।নিঃস্বার্থ ভালোবাসা,মমতায় আগলে রাখেন মা।মায়ের এক অদৃশ্য হাত আমাকে সবসময় সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে। জীবনের কঠিন সব দিনগুলোতেও অবলীলায় যাতনা মেনে নিয়ে ছায়ার মতোই পাশে থাকেন মা।পৃথিবীর সকল ভালোবাসায় খুঁত থাকতে পারে কিন্তু মায়ের ভালোবাসা নিখুঁত।ব্যস্তময় ক্যাম্পাস জীবনে মায়ের খোঁজ নিতে না পারলেও মা আমার খোঁজ নিতে কখনোই ভুলে না।আমাদের সপ্তাহিক, মাসিক,বার্ষিক ছুটি থাকলেও মায়ের নেই কোনো ছুটি।ছোটবেলায় যেমন আমাদের শখ আহ্লাদ পূরণের দায়িত্ব ছিলো মায়ের, তেমনি এখন মায়ের শখ আহ্লাদ পূরণের দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের। মা হচ্ছে পবিত্র এক ফুলের মতো যাকে যতোই দেখি ততই মুগ্ধ হই।আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী নারী হলেন আমার মা।মায়ের কাছে আমি চিরঋণী।
সানজিদা খানম উর্মি
(১ম বর্ষ
ফার্মেসী বিভাগ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়)
পৃথিবীর সবাই যখন মাদার্স ডে সেলিব্রেট করে, আমার মা তখন মেয়ে দিবস কবে সেইটা জিজ্ঞেস করে। মেয়ে দিবসে এত্তগুলো চিপ্স, চকলেট নিয়ে এসে আমাকে সারপ্রাইজ দেয়। আমার মায়ের কাছে মনে হয় এখনোও পৃথিবীর সবচেয়ে সুখের দিন, যেইদিন আমার জন্ম হয়। নিজের চাহিদার কথা যখন নিজেই জানতাম না, আম্মু তখন থেকে চিন্তা করতো আমার ছোট্ট সোনামনিটার জন্য একটা বিছানা লাগবে, তার সাথে ম্যাচিং সোফাসেট লাগবে, সাজুগুজু করার জন্য একটা ছোট্ট ড্রেসিং টেবিল লাগবে, ছোট্ট একটা আলমারি লাগবে ইত্যাদি।
কোথাও বাহিরে যেতে চাইলে সবার আম্মুকে দেখি মানা করে দেয়। আমার মা আজ পর্যন্ত কোথাও যেতে মানা করেনি আমাকে, সবাই শুনে অনেক অবাক হতো। এতটাই অটূট বিশ্বাস আমার মায়ের আমার উপর।কিন্তু আমি তো আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করি আমাকে তোমার কোলে পাঠিয়েছে, এখন শুধু এটাই চাই তোমার আগে যেন আমাকে নিয়ে যায়, কারন আমি তোমাকে ছাড়া তো থাকতে পারবো না। আল্লাহ যেন তোমাকে সুস্থ রাখে, সব বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে, হায়াত অনেক অনেক বৃদ্ধি করে দেয় এই দোয়া করি সবসময়। ভালো থেকো মা।
মাসুদা তাসনিম কৃতী
(১ ম বর্ষ
মাইক্রোবায়োলজি
গণ বিশ্ববিদ্যালয়)