গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্করণের লক্ষ্যে ৭ দফা দাবী রাখেন যেখানে ওয়েবার সংস্করণ, ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি সম্মান থেকে শুরু করে দুর্নীতি দমন সবই উঠে এসেছে। যাদের জন্য এই সংস্করণের তোড়জোড় সেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা কিভাবে দেখছেন এই পদক্ষেপ গুলোকে? সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরছেন গবি প্রতিনিধি মুনিয়া রহমান জান্নাত।
শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটছে
৭ দফা দাবি এবং ক্লাস বর্জন এসকল কিছুই আমরা শিক্ষার্থীরা করছি সমসমায়িক প্রেক্ষাপট এর সাথে তালমিলিয়ে এবং নতুন বাংলাদেশে গড়ার তাগিদ থেকে। আমি এই বিষয়ে সকল শিক্ষার্থীদের সাথে একমত তবে এর সাথে এটাও নজরদারিতে রাখতে হবে যেনো আন্দোলনের কারনে একাডেমিক শিক্ষাব্যাবস্থায় ব্যাঘাত না ঘটে কেননা এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে চলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে দীর্ঘদিন সকল শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে বেশ দূরেই ছিলো। আমার মনে হয় যতদ্রুত সম্ভব ক্লাসে ফিরতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা উচিৎ সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার সময়সীমা চিন্তা করে।
নাম: আল শাহরিয়ার
ব্যাচ:৪২তম
বিভাগ: মাইক্রোবায়োলজি“সংস্করণের জন্য এইটুকু স্যাক্রিফাইস করাই যায়”
কোটার লড়াই শুরু করার পর কেউ জানতো না আমাদের মুক্তি মিলবে। যেহেতু দ্বিতীয় স্বাধীনতার সুযোগ পেয়েছি এবং দেশ সংস্কার শুরু হয়েছে সেহেতু সকল ক্ষেত্রেই হওয়া উচিত। আমাদের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদত্যাগের মাধ্যমে এই সংস্কার শুরু হয়েছে এখন নিয়মকানুনও কিছু সংশোধন করতে হবে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যে প্রতিপাদ্য সামনে রেখে গরিবের বিশ্ববিদ্যালয় চালু করেছিলো তা ধরে রাখতে হবে। তাই ৭ দফা দাবী নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটলেও দাবী আদায়ের জন্য ও নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্করণের জন্য এইটুকু স্যাক্রিফাইস করাই যায়।
নাম : ইয়াসমিন আক্তার
ব্যাচ: ৩৬তম
বিভাগ: ফার্মেসি“সংস্কারের পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া উচিৎ ”
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান বাধা কাটিয়ে উঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা, গণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার মুহুর্তে নতুন বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। এমনিতেই অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছি , তার উপর এখনো ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ থেকে যে ক্ষতি হচ্ছে, তা হবে অপূরনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ত্রুটি থাকলে তা সংস্কারের দাবি আমিও সমর্থন করি, কিন্তু একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলন করা আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। অন্তত দেশের এই পরিস্থিতিতে সংস্কারের পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য কল্যাণকর। দেশের এই সংস্কারের সময়ে আমি একজন শিক্ষার্থী হিসেবে চাইবো আমাদের প্রতিষ্ঠানের সকল ত্রুটি সংস্কার করা হোক তবে সেটা জোরপূর্বক ক্লাস বর্জন করে নয়।
নাম: অনি (ছদ্মনাম)
বিভাগ: সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগ
“বেশ চাপে থাকতে হবে”
আমরা এক সংকটময় মুহূর্তে অবস্থান করছি। রাজনৈতিকভাবে দেশ অস্থিতিশীল, দেশের বন্যা পরিস্থিতি আমাদের বিমর্ষ করে রেখেছে। চারদিকে বিভিন্ন সংস্করণের হিড়িক পরেছে এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়েও সংস্করণ প্রয়োজন ছিলো। করোনা পরবর্তীকালীন সময়ে অনেক সিদ্ধান্ত এসেছে কর্তৃপক্ষ থেকে যা আমাদের শিক্ষার্থী বন্ধব ছিলোনা তবে এই মুহূর্তে এই আন্দোলনটা শিক্ষার্থীদের জন্য মিশ্র এক প্রতিক্রিয়া নিয়ে এসেছে। বেশ কিছু কারণেই শিক্ষাব্যবস্থা স্থবির ছিলো প্রায় ১ মাস। এখন ক্লাস বর্জন, প্রশাসনিক ভবন বন্ধ রাখায় ক্ষতিই হচ্ছে। আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল সামনে রেখে খুব কঠিন সময়ই আসতে যাচ্ছে যা আমাদের বেশ চাপে রাখবে।
নাম: রোহিত সাহা অরিন
ব্যাচ: ১৭তম
বিভাগ : বায়োকেমিস্ট্রি