দেশের শেয়ার বাজার এক রকম মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। টানা দরপতনের মধ্যে গত সপ্তাহে দেশের শেয়ার বাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। তবে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান নাম লিখিয়েছে, দাম কমেছে তার দ্বিগুণের। এরপরও গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৮৮৯ কোটি টাকা বেড়ে গেছে।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৬৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল সাত লাখ ৬২ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৮৮৯ কোটি টাকা। এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১১টির। আর ২০৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে আট দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪১ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে পাঁচ দশমিক শূন্য পাঁচ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ কমেছে। এর আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে দুই দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ।
ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক কমলেও প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বেড়েছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচক বেড়েছে এক দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি ১০ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ কমে।
এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ২৭৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৮৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৭৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় এক হাজার ৯২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক সপ্তাহে মোট লেনদেন বেড়েছে ৭০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা বা ৬৪ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ ২১ ফেব্রুয়ারি শেয়ার বাজার বন্ধ থাকায় গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
সর্বশেষ সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১২ কোটি ৯৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৭ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা। ৯২ কোটি ১৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম।
এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, শাইনপুকুর সিরামিকস, জেমিনি সি ফুড, আমরা নেটওয়ার্ক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আলহাজ টেক্সটাইল এবং ওরিয়ন ফার্মা।