পাঁচ দফা দাবিতে সিলেট পরিবহন শ্রমিকদের ডাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি চলছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সিলেট কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস, মাইক্রোবাস, কিংবা অন্য কোনো পরিবহন ছেড়ে যায়নি। অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী সাধারণ মানুষেরা।
দুইদিন পর এসএসসি পরীক্ষা। বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এই সময়ে কর্মবিরতি বিপাকে ফেলেছে সংশ্লিষ্টদের। অন্যদিকে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পরীক্ষা চলছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে পৌঁছতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে, এই কর্মবিরতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সকাল ৯টা থেকে অফিস আদালত শুরু হওয়ায় আগেই অফিসের উদ্দেশ্যে বের হতে হয়। পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্য যাত্রা করা রফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন পরপর ধর্মঘট ডাকা সিলেটের পরিবহন শ্রমিকদের নৈমিত্তিক কার্যক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে তাদের উদ্দেশ্য খোঁজে বের করা প্রয়োজন। সরকারকে এর বিহিত করা প্রয়োজন।
অপরদিকে সিলেট বিভাগীয় হাসপাতাল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগত রোগীর স্বজনরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নারী-পুরুষ অনেককে পায়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়। জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজের আসা রোগীদের স্বজনদেরও একই অবস্থা।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, জেলা ট্রাক পিকাপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, ইমা লেগুনা হিউম্যান হুলার শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা অটো টেম্পু অটোরিকশা শ্রমিক জোট, সিলেট জেলা ট্যাংক—লরি শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নসহ সব শ্রমিক ইউনিয়ন সম্মিলিতভাবে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের জানমালের যেন কোনো ক্ষতি না হয় শ্রমিক নেতাদের সেদিকে দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ জানান, পরিস্থিতি তাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। কোথাও সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।
প্রসঙ্গত, পরিবহন শ্রমিকদের ৫ দফা দাবি হচ্ছে—সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার ও উপ—কমিশনারের (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ করা, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার করা, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোর দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজি চালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া। এছাড়াও অনুমোদনহীন গাড়ি যেমন— অটো বাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিংকৃত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা। এই দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে পরিবহন শ্রমিকরা।