দেশের মাত্র আটটি ব্যাংক ভালো অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি ২০২৩ সালের জুন থেকে অর্ধ-বার্ষিক আর্থিক কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে ব্যাংকের স্বাস্থ্য সূচক তৈরি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা বিভাগ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আটটি দেশি ও আটটি বিদেশি ব্যাংকসহ ১৬টি ব্যাংক ভালো অবস্থায় রয়েছে।
এই ব্যাংকগুলো হলো- প্রাইম ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সীমান্ত ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক আলফালাহ, উরি ব্যাংক, এইচএসবিসি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, সিটি ব্যাংক এনএ, হাবিব ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মাত্র ১৬টি ব্যাংক গ্রিন জোনে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে আটটিই বিদেশি ব্যাংক। অর্থাৎ গ্রিন জোনে দেশীয় ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র আটটি।
৫৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১২টির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, যার নয়টি ইতিমধ্যে রেড জোনে চলে গেছে। ইয়েলো জোনে আছে ২৯টি ব্যাংক; এর মধ্যে তিনটি ব্যাংক রেড জোনের খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।
নয়টি ব্যাংক হলো- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ন্যাশনাল ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।
ইয়েলো জোনে রয়েছে দুটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক। এগুলো হলো- বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক।
১৯টি প্রচলিত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আটটি শরিয়াহ-ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক।
১৯টি প্রচলিত ব্যাংক হলো- আইএফআইসি ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইউনাইটেড বাণিজ্যিক ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি বাণিজ্যিক ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এসবিএসি ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংক।
আটটি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েলো জোন ব্যাংকগুলো শিল্প গড় তুলনায় তাদের স্বাস্থ্যের আপেক্ষিক অবনতির কারণে তদারকির মনোযোগ প্রয়োজন।
এতে আরও বলা হয়, রেড জোনে পড়া ব্যাংকগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক রেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মের অধীনে সব ব্যাংককে সংকলন করেছে। এরমধ্যে ছয়টি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তা হলো- মূলধনের পর্যাপ্ততা, সম্পদের গুণমান, ব্যবস্থাপনা, উপার্জন, তারল্য এবং বাজারের ঝুঁকির প্রতি সংবেদনশীলতা।
এতে ১ রেটিং সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়, আর ৫ রেটিং সবচেয়ে খারাপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাল ও হলুদ জোনে থাকা ব্যাংকগুলোর বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন।
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ব্যাংকিং পর্যালোচনায় ৩৮ ব্যাংকের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। আর ১৬টির অবস্থা উন্নতি হয়েছে।
তবে ভিন্নতা থাকায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক বিশ্লেষণ থেকে বাদ পড়েছে।
অন্যদিকে, ঐতিহাসিক তথ্যের অভাবে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।