মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের চাকরিচ্যুত ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসারের (ডিএসও) সহযোগিতায় নম্বর ক্লোন করে বিকাশ এজেন্টকে ফোন দিত একটি চক্র। এরপর অ্যাকাউন্ট আপডেটের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারকচক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন বিকাশের ডিএসও শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টন, মো. রিপন মিয়া, মো. ইউসুফ মিয়া এবং এই চক্রের হোতা মাহবুব কাজী। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন এবং ৬টি সিম, বিকাশ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আরও ৫১টি বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, একজন বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পায় সিআইডি। পরে তদন্তে নেমে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গত বুধবার দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালায় সংস্থাটির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)।
রেজাউল মাসুদ বলেন, অভিযানে জামালপুর জেলা থেকে বিকাশের সাবেক ডিএসও শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টন ও মো. রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মো. ইউসুফ মিয়া নামের আরেকজনকে ফরিদপুরের মানিগ্রাম থেকে এ বিকাশ প্রতারণারচক্রের হোতা মাহবুব কাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রেজাউল মাসুদ আরও বলেন, এ চক্রের হোতা মাহবুব কাজী একজন পেশাদার বিকাশ প্রতারক। বিকাশে প্রতারণা করার জন্য তিনি একদিন ফোন করেন গ্রেপ্তারকৃত শাহরিয়ার নাফিজ মিল্টনকে। পরে কথায় কথায় তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে মাহবুব কাজীর চাহিদা মোতাবেক মিল্টন তার ডিস্ট্রিবিউটর হাউজের আওতাধীন বিকাশ এজেন্ট নম্বর মাহবুব কাজীকে সরবরাহ করেন। বিনিময়ে তিনি মাহবুবের কাছ থেকে কমিশন পেতেন। পরবর্তীতে শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টনের মাধ্যমে বিকাশের আরেক ডিএসও রিপন মিয়াও এই কাজে জড়িয়ে পড়েন।
রেজাউল মাসুদ বলেন, গ্রেপ্তার মাহবুব কাজীর দেওয়া বক্তব্য এবং তার কাছ থেকে জব্দকৃত মোবাইল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি এই কাজে খুবই পারদর্শী। এই ভুক্তভোগী ছাড়া আরও অনেক বিকাশ এজেন্ট ও বিকাশ ব্যক্তিগত নম্বর থেকে এই বিকাশ প্রতারকচক্র গত তিন মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই কাজের জন্য তারা পেইড ভার্সন ক্লোনিং অ্যাপস ব্যবহার করে বিকাশের ডিএসওদের নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন এজেন্টদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে আসছে।