ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় সাকুরা পরিবহনে দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইসমাইল ইমন নিহতের ঘটনার প্রতিবাদ এবং নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ পাঁচ দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে আগুণ ধরিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।আজ মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে বরিশাল-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। এর ফলে বরিশাল-পটুয়াখালী এবং ভোলা সড়কের তিন প্রান্তে অসংখ্য যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়েছে।খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছেন।আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত ৫ নভেম্বর শনিবার রাতে ঢাকা থেকে সাকুরা পরিবহন কোম্পানির একটি বাসে বরিশালের উদ্দেশ্য যাত্রা করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫ম ব্যাচের ছাত্র ইসমাইল ইমন।পথিমধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানাধীন মাধবপুর এলাকায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে চারজন নিহত এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইসমাইল ইমনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ইমনকে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা কল্যাণপুর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে আইসিইউতেত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অজ্ঞাত পরিচয়ে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রবিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পরিচয়ের অভাবে শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইমনের ভর্তির সুযোগ মেলেনি। শিক্ষার্থীদের দাবি সঠিক সময়ে উন্নত চিকিৎসার অভাবে ইমনের মৃত্যু হয়েছে।এর প্রতিবাদসহ পাঁচ দফা দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের মধ্যে শোকের ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে সাকুরা বাস কর্তৃপক্ষকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, চিকিৎসা গাফিলতির কারণ তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে হবে, সাকুরা বাসের রুট পারমিট সাময়িকভাবে বাতিল করতে হবে, প্রত্যেক বাসকে জিপিএস ট্রাকিংয়ের আওতায় এনে অতিরিক্ত গতির জন্য স্বয়ংক্রিয় জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে এবং স্পিড লক ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের উত্থাপিত পাঁচ দফা দাবি না মানা হলে আন্দোলন থেকে ঘরে ফিরবেন না। প্রয়োজনে আর বৃহৎ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন বলেও হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানা যায়নি।