কিশোরগঞ্জে টাকার বিনিময়ে পদ দেয়ার অভিযোগ উঠিয়ে তাঁতী লীগের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরাতন থানা এলাকায় কমিটির নতুন সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে কমিটি ও পদবাণিজ্যের এ সব অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁতী লীগ নেতা আবু হানিফ খোকন।লিখত এ অভিযোগে বলা হয়, নতুন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরের পদবাণিজ্যের মাধ্যমে অযোগ্য এবং বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে পদ দিয়েছেন।সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালে মো. ইব্রাহিম খলিলকে আহ্বায়ক ও মো. হুমায়ুন কবিরকে সদস্যসচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা তাঁতী লীগের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এ বছরের ৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে শহর সমবায় কমিউনিটি সেন্টারে তাদের সম্মেলন হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বড় ছেলে রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক। সম্মেলনে ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের দাবি উঠলেও কেন্দ্রীয় নেতারা এ দাবি অগ্রাহ্য করেন। তারা পরে কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দেন।দীর্ঘদিন পর গত ৫ ডিসেম্বর ফেসবুকের মাধ্যমে ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা তাঁতী লীগের কমিটি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে সভাপতি করা হয় মো. ইব্রাহিম খলিলকে আর সাধারণ সম্পাদক হন মো. হুমায়ুন কবির। নতুন জেলা কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর বহু নেতাকর্মী কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে প্রতিবাদ করেন। তাদের অভিযোগ এ কমিটিতে বিএনপি ঘরনার অন্তত ১০-১২ জন লোক রয়েছে। একই পরিবারের চারজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। অন্যজেলার লোকজনও কমিটিতে আছে। এমনকি রাজাকার পরিবারের লোকজনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির লোকজনের টাকার বুনিময়ে এসব করেছেন।সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, কমিটি ও পদবাণিজ্য করে তিনি লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার নিজের মন মতো তালিকা করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছ থেকে জেলা কমিটির অনুমোদন নিয়েছেন। কাজেই এ কমিটি দ্রুত বাতিল করতে হবে। নয়ত কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে। একই সঙ্গে তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।সংবাদ সম্মেলনে তাঁতী লীগের সদস্য মো. শাহাবউদ্দিন অভিযোগ করেন, পদ দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে সাধারণ সম্পাদক ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তাকে কাঙ্ক্ষিত পদ দেওয়া হয়নি। যেসব উপজেলা কমিটি হয়েছে তার সবগুলো থেকে মোটা অঙ্কের কমিটি বাণিজ্য করেছেন সাধারণ সম্পাদক। তিনি পদ দেওয়ার কথা বলে কমিটির সবার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এরমধ্যে কেউ কেউ পদ পেয়েছেন আবার অনেকে পদ পাননি।উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তাঁতী লীগ নেতা মো. রাহমাতুন করিম ভূঁইয়া মামুন, কাজী সাইফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম নুরু, হাজী শাহাবউদ্দিন, শফিকুল ইসলাম শফিক, শফিকুর রহমান সোহান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা সবাই আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। তাদের কেউ কাঙ্ক্ষিত পদ পাননি। আবার অনেকজনকে কমিটিতেই রাখা হয়নি।