যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার বাকড়াঁ ইউনিয়নের দিগদানা হাইস্কুলের পেছনে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। বালুর স্তুপ করে রাখা হচ্ছে স্কুলের পেছনে আর স্কুল চলাকালীন সময়েও মাঠের মধ্যে দিয়ে গাড়িতে করে সেই বালু বিক্রয় করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায় স্কুলের জমিতে বড় বড় স্তুপ করে বালি রাখা হয়েছে। পাশেই কপোতাক্ষ নদের কোল ঘেঁষে মিজানুরের পুকুর থেকে মেশিন দিয়ে দিনরাত বালু কাটার কাজ চলছে। আর সেই বালু স্কুলের মাঠের মধ্যে দিয়ে ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্রলি বোঝাই করে বিক্রি করা হচ্ছে।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানালো এই বালির ট্রাকের কারণে তাদের খেলার মাঠে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মাঠে তাদের খেলাধুলা করার পরিবেশ নেই। অন্যদিকে গাড়ি চলাচলের কারনে দূর্ঘটনা ঘটার ভয়ে বাচ্চারা মাঠে যাচ্ছে না। গাড়ির শব্দে স্কুলে ক্লাস করতেও সমস্যা হচ্ছে।
বালি উত্তোলক দিগদানা গ্রামের মৃত নেছার আলীর ছেলে আবুল বাসার বলেন, আমি স্কুলের মাষ্টারদের কাছ থেকে লিজ নিয়েছি টাকার বিনিময়ে, আর স্থানীয় নেতা ও প্রশাসনকে মাসিক টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছি। আপনার যা ইচ্ছা তাই লেখেন।
বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে উক্ত স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধেও। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান, আমরা রাখতে দিয়েছি, কাউকে কৈফিয়ৎ দেয়ার সময় নেই। সংবাদকর্মী পরিচয় দিলে বলেন, পত্রিকায় লেখেন দেখি কি করতে পারেন?
স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বলেন মাটি নিয়ে যাওয়ার বিষয় একটা চুক্তি হয়েছিলো তারা স্কুলে কিছু সহযোগিতা করবে। কিন্তু সে কথা রাখেনি। এখন জোর করে মাটি রেখেছে। আমি বলেছি মাটি সরিয়ে নিতে আর গাড়ি চালানো বন্ধ করতে।
বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন জানান, ইতিমধ্যে আমরা কয়েকটা মাটি কাটার অবৈধ ট্রাক জব্দ করেছি। নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা জরিমানা করছি যাতে আর না চালাতে পারে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাসিক টাকার বিষয়টা জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান, বলেন এ বিষয়টা আই সি সাহেব জানেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এম মামুনুর রশীদ বলেন, স্কুলের মাঠ বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহার করা খুবই অন্যায় কাজ। সংবাদ পেয়ে আমরা সেখানে অভিযান পরিচালনা করেছি। বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়ে দুই দিনের মধ্যে স্কুল মাঠ খালি করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।