বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

নিজেদের মুদ্রায় বাণিজ্যে আরও এগিয়ে গেলো ঢাকা-দিল্লি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে / ইপেপার / প্রিন্ট ইপেপার / প্রিন্ট

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ বছরে প্রায় ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুতের অর্ধেকেরও বেশি। দুই দেশের মধ্যে টাকা-রুপিতে লেনদেন প্রক্রিয়া চালু হলে রিজার্ভের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ ডলার বেঁচে যাবে। ডলার সংকটেও পরিত্রাণ পাবে দুই দেশ। এই বাস্তবতায় গত ডিসেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের মাধ্যম হিসেবে মার্কিন ডলারের পরিবর্তে রুপিতে লেনদেনের প্রস্তাব দেয় ভারত। এরই ধারাবাহিকতায় নিজেদের মুদ্রায় বাণিজ্যে আরও এগিয়েছে উভয় দেশ।নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন করতে সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক তাদের ভারতীয় ঋণদাতা স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলবে। ভারতীয় ব্যাংক দুটিও বাংলাদেশি দুই ব্যাংকে একই ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলবে।গতকাল সোমবার (১৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তারা জানান, অ্যাকাউন্টগুলো খুলতে-আন্তর্জাতিকভাবে যা ভস্ট্রো ও নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট নামে পরিচিত-স্ব স্ব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগবে।

সোনালী ব্যাংকের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম বলেন, ‘টাকা ও রুপিতে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হলে ডলারের ওপর চাপ কমবে। এতে উভয় দেশই লাভবান হবে।’তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে দুই দেশের আরও ব্যাংক এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবে।

জানা গেছে, উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সব লেনদেন নিজস্ব মুদ্রায় হবে না। বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। তাই দুই বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ লেনদেন টাকা ও রুপিতে সম্পন্ন করবে দুই দেশ। অন্যদিকে গত অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩.৬৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলার টাকা-রুপিতে লেনদেন হলেও বাকিটা বরাবরের মতো মার্কিন ডলারে পরিশোধ করবে বাংলাদেশ।ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বলেন, কোনো ধরনের তৃতীয় মুদ্রার অন্তর্ভুক্তি ছাড়া সরাসরি টাকা-রুপিতে লেনদেন করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘উভয় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পেলে আমরা গ্রাহকদের জানিয়ে দেব যে সরাসরি টাকা-রুপির মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি করা যাবে। আগ্রহী ব্যবসায়ীরা তখন সরাসরি রুপিতে এলসি খুলতে পারবেন। এতে ব্যবসায়ীদের খরচ কমবে। আবার ডলারের চাহিদায় যে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি কমে আসবে।’

দুই দেশের মধ্যে লেনদেন প্রক্রিয়া কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে চলতি মাসের শুরুর দিকে ঢাকা সফর করে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিনিধিদল। তারা গত ১১ এপ্রিল ইবিএলে বৈঠক করে। সেখানে ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সফরকারীরা টাকা ও রুপিতে দুই দেশের বাণিজ্যিক লেনদেন পরিশোধ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কয়েক মাস আগে রুপিতে সরাসরি লেনদেন করার বিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে।

তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার এই সিদ্ধান্তের আলোকে বাংলাদেশ বিষয়টি পর্যালোচনা করে টাকা ও রুপিতে দ্বিপাক্ষিক লেনদেন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের কোনো ব্যবসায়ী আমদানি বা রপ্তানির ক্ষেত্রে রুপিতে এলসি খুলতে চাইলে, তা করতে পারবেন।’

আরো পড়ুন

এস এন্ড এফ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

Developer Design Host BD