ফেনীর বানভাসী মানুষের পাশে দাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকাল ৪ টায় গবি শিক্ষার্থীদের একটি অংশ শুকনো খাবার, জরুরী চিকিৎসার ওষুধ, বাচ্চাদের ফর্মুলা দুধ, সাবান, প্রয়োজনীয় কাপড়সহ ফেনীর বন্যার্ত মানুষদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট হওয়ায় বোতলজাত পানি এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ফিটকিরি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বন্যার্ত অসহায় মানুষদের জন্য এই উদ্যোগ এর ব্যাপারে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবক ইবরাহীম হোসেন দেশরক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার উল্লেখ করে বলেন, “ চলমান দূর্যোগে বন্যার্তদের জন্য সাহায্য পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা ভাই-বোন নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে যতো বেশি অর্থ কিংবা ত্রাণ সংগ্রহ করা যায়। নিজ ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা নিজেদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সাহায্য করেছে।”
বর্তমানে সাহায্য ও ত্রাণ সংগ্রহ চলমান থাকা নিয়ে সাইফুল্লাহ মানসুর বলেন, “ মাত্র একদিনের মধ্যে আমরা প্রায় ৮০ হাজার টাকার সাহায্য পেয়েছি যা দিয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ আমাদের একটি টিম পৌঁছেছে। অপর অংশ এখনো ত্রাণ সংগ্রহ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের টিমের যে অংশ গিয়েছে তারা ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করে জানাবেন আরও অন্য কি ধরনের জিনিস লাগবে। আমরা এদিক থেকে কালেক্ট করা ফান্ড থেকে তা কিনে পৌঁছে দিবো।”
সরেজমিনে দেখা যায়, আশেপাশের মানুষরা শুকনা কাপড় নিয়ে আসছেন, কেউ শুকনা খাবারের ব্যাবস্থা করেছেন, কেউ ওষুধ দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে নিজের অসহায় ভাই-বোনদেরকে সাহায্য করার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে এক তীব্র আকাঙ্খা।
শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগের ব্যাপারে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হাসান মাসুদ জানান, “বাংলাদেশের মানুষ এখন সব দিক থেকে খুবই কঠিন সময় পার করছে, একটি সফল গণ অভ্যুত্থানের পরে দেশের দক্ষিণ পূর্বের কয়েকটি জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মানুষ জীবন মৃত্যুর সাথে লড়ছে। তাদের সাহস যোগাতে এবং ত্রাণ সহায়তা দিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বর্তমান এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের একটি দল নিজ উদ্যোগে টাকা তুলে ইতোমধ্যে দুর্গত এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে শুনে আমি তাদের শিক্ষক হিসেবে অত্যন্ত গর্বিত। এর আগেও তারা সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। আল্লাহ তাদের সহায় হোন।”
উল্লেখ্য, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। অসংখ্য মানুষ পানিবদ্ধ হয়ে আছে। এমতাবস্থায় দেশের সকল মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতা এই ক্রান্তিকালীন সময় পার করে উঠতে সাহায্য করবে।