ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন তানজিমা বেগম (৫৫)। সেখানে ছেলে, ছেলের বউ ও তিন বছরের নাতিকে নিয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভুক্ত ছিলেন।
পরে বিকেলে তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সাভার উপজেলা আওয়ামি লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম সমরের নেতৃত্ব দেয়া ওয়াসিল উদ্দিন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি দলটির দেওয়া চিড়া, গুড় ও বিস্কুট পেয়ে কেঁদে ফেলেন এই নারী।
তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সমরের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, ‘বাবা, আমার নাতিগু সকাল থাকি খালি কান্দে। খানি (খাবার) দিতা পাররাম না, বাঁচমু কিলা? তোমার খাওন পাইয়া জানডা বাঁচলো!
ভারীবৃষ্টির পানিতে প্লাবিত সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে সিলেটবাসীর। এমন খবর পেয়ে সাভার থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে গেছেন মানবতার সেবক তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সাভার উপজেলা আওয়ামি লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম সমর।
মা ও ছোট এক সন্তানকে নিয়ে নগরের একটি স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন আনিকা বেগম (২২)। সমর চেয়ারম্যানের ত্রাণ পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন এই নারী।
নগরের এলাকায় যে কলোনিতে আকলিমা পরিবার নিয়ে থাকেন, সেখানে এখন কোমরসমান পানি। আকলিমা বলেন, ‘আমরারে কেউ জিগাইল না দুই দিন ধইরা। ঘরে খাওন নাই। খুশি হইছি খাওন পাইয়া।
এভাবে সিলেটে প্রশাসনের কর্মকর্তারাও যেখানে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যেতে পারছিলেন না, সেসব জায়গায়ও গিয়েছেন ওয়াসিল উদ্দিন ফাউন্ডেশন প্রতিনিধি দল ত্রাণ বিতরণ কারতে।
এই দুর্যোগে বানভাসিদের পাশে দাঁড়াতে সাভারের তেঁতুলঝোড়া থেকে ছুটে সিলেটে বন্যার্ত মানুষের কাছে গিয়েছেন স্বয়ং তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামি লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম সমরের নেতৃত্ব দেয়া
ওয়াসিল উদ্দিন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি দলটি। তুলে দিয়েছেন খাদ্যসামগ্রী, সুপেয় পানি, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি।
সিলেট নগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ওয়াসিল উদ্দিন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন তারা। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের বানভাসি মানুষের কাছে শুকনা খাবার থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দিয়ে এসেছেন।
সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০০০ পরিবারের মধ্যে চাল, আলু, আটা, পেঁয়াজ, তেল, ডাল, চিড়া, বিস্কুট, কেক ও মোমবাতি বিতরণ করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য বন্যা কবলিতদের জন্য তারা যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছে তার মধ্যে রয়েছে, ৬ টি নৌকা,আড়াই হাজার পিসেরও বেশি বড় ও ছোটদের কাপড়, ৪০০০ পিস মোমবাতি, ২০০০ পিস দিয়াশলাই,১০ টা লাইফ জ্যাকেট, ১০,০০০ পিস পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট, ১০,০০০ পিসেরও বেশি প্যারাসিটামল,ডায়রিয়ার ট্যাবলেট, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ, ঠান্ডা জনিত রোগের ট্যাবলেট, ২০,০০০ প্যাকেট খাবার স্যাইলাইন এবং ৫০০ এরও বেশি বোতল বাচ্চাদের জ্বরের সিরাপ।
এছাড়াও ২০০০ পরিবারের জন্য যে উপহারের প্যাকেট দেয়া হয়েছে তাতে আছে ২ কেজি চিড়া, ১ কেজি টোস্ট বিস্কুট। শিশুদের জন্য আছে আধা কেজি করে সুজি ও গুড়ের প্যাকেট, ছোট পাউডার দুধ এবং ২ প্যাকেট করে এনার্জি বিস্কুট।