চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ তিনটি ওয়ানডে সিরিজে ৯টি ম্যাচ খেলেছে। তাতে ৭টিতে জয় ২টিতে হার। সিরিজ জিতেছে সবকটিতেই। সিরিজ জেতা প্রতিপক্ষের মধ্যে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো বড় দলও। তাদের হারান হয়েছে তাদের মাটিতেই। সবশেষ উইন্ডিজকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাই করেছে তামিম ইকবালের দল। একদিনের ক্রিকেটে অসাধারণ ধারবাহিকতা বজায় রাখা বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ এবার জিম্বাবুয়ে।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শুক্রবার (৫ আগস্ট) তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। দেখা যাবে সরাসরি টি-স্পোর্টসে।
জিম্বাবুয়ের তুলোনায় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নয় শুধু, দক্ষিণ আফ্রিকান অঞ্চলের এই দেশটির বিপক্ষে ২০১৩ সাল থেকে কখনো হারের স্বাদ পেতে হয়নি। নিজেদের মাঠ কিংবা তাদের মাঠ, সবশেষ ১৯টি ম্যাচে জয়ী দলের নাম একটাই; বাংলাদেশ। ৬৫ বারের দেখায় বাংলাদেশ জয়ের হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেছে ইতিমধ্যে, তবুও কাগজে কলমের হিসেব আর মাঠে ক্রিকেট সম্পূর্ণ আলাদা।
জিম্বাবুয়ে এর আগে কখনো বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে না পারলেও এবার ঠিকই পেরেছে। ঠিক তেমনিতে মাঠের বাইরের হিসেব নিকেশে বাংলাদেশ যোজন যোজন এগিয়ে থাকলেও ওয়ানডেতে হারারেতে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না জিম্বাবুয়েকে। তেমনটা মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিজেই। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন জিম্বাবুয়ে মুখিয়ে থাকবে জয়ের জন্য।
‘যদি দুটি দলের হিসাব করেন তাহলে আমরা ভালো দল। কিন্তু ক্রিকেট খেলা আসলে ভালো দল দিয়ে হয় না। নির্দিষ্ট দিনে কে ভালো বা খারাপ খেলছে, হারজিত সেটা দিয়েই নিশ্চিত হয়। আপনি টি–টোয়েন্টি সিরিজে দেখেছেন, তারা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে এবং এ কারণেই সিরিজ জিতেছে। তাই তাদের হারাতে হলে আমাদের নিজেদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে।’
‘এটা মানতে হবে ওরা টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো করেছে। আগামীকাল দুই দলের জন্যই নতুন চ্যালেঞ্জ। আমি জানি জিম্বাবুয়ে জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে’-আরও যোগ করেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুই অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান-মোসাদ্দেক হোসেন একটিবারও টসে জেতেননি। সববারই রান তাড়া করেছে বাংলাদেশ। তাতে দুবারই ব্যর্থ হতে হয়েছে। ওয়ানডেতে টসকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তামিম। তবে শীতের সকালে হারারের উইকেটে প্রথমঘণ্টা দিকে উইকেট কিছুটা ভিন্ন আঁচরণ করবে বলে মনে করছেন তামিম। এ ছাড়া উইকেট ব্যাটিং সহায়ক আচরণ করবে বলে মনে করেনি তিনি।
তামিম বলেন, ‘সাধারণত উইকেট এখানে ভালোই থাকে। একটু চ্যালেঞ্জিং হয় যখন ৯টা ১৫ মিনিটে খেলা শুরু হয়। প্রথম এক–দেড় ঘণ্টা একটু চ্যালেঞ্জিং হয়। এরপর সব ভালো। একটা ব্যাপার কী, একেবারে কর্নারের উইকেটে খেলা। তাই এক দিকের বাউন্ডারি একটু ছোট থাকবে। ৫৫ গজের মতো। এটা শুধু আমাদের জন্যই নয়, দুই দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং হবে। এটা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজাতে হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ছুটি নেওয়া মুশফিকুর রহিম এই ম্যাচ দিয়ে আবারও খেলায় ফিরবেন। সকালের সুবিধা কাজে লাগানোর কথা ভাবলে বাংলাদেশ খেলাতে পারে তিন পেসার। এর আগে গায়ানায় উইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ এক পেসার নিয়েও নেমেছিল। হারারেতে এমন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। একাদশে ফিরতে পারেন তাসকিন আহমেদ-শরিফুল ইসলাম। স্পিনে দেখা যেতে পারে মেহেদী হাসান মিরাজ-তাইজুল ইসলামকে
বাংলাদেশ এক সাকিব আল হাসান ছাড়া শক্তিশালী দল নিয়ে নামলেও জিম্বাবুয়ে পাচ্ছে না তাদের নিয়মিত অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকেই। সঙ্গে নেই শেন উইলিয়ামসও। নেতৃত্ব দেবেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান রেগিস চাকাভা। ওয়ানডেতেও তাদের তুরুপের তাস হতে পারেন সিকান্দার রাজা। এছাড়া শেষ ম্যাচে বিধ্বংসী ব্যাটিং করা রায়ান বার্লতো আছেনই!।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।