আসন্ন দুর্গাপূজায় দেশের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।ডিএমপি কমিশনার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দুই ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। একটি হলো- জঙ্গি হামলা, আরেকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করা।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, ৫০ যুবক জঙ্গি হামলার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। তারা বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে হামলার জন্য ট্রেনিংও করছে, এগুলোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কারণ, বেশ কিছু পূজা মণ্ডপ ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া কোনো সহিংস ঘটনার আগে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য থাকবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিরা এখন অনলাইনে সক্রিয় রয়েছে। তারা নানা ধরনের পোস্ট দিচ্ছে। তারা সেলফ রেডিক্যালাইজড হয়ে (লোন উলফ) হামলায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করছে। কেউ তাদের পোস্ট দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আমরা অ্যালার্ট আছি।
তিনি আরো বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পূজামণ্ডপে আমাদের কন্ট্রোল রুমসহ সব জায়গায় আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পূজায় কোনো ধরনের নাশকতা যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে খেয়াল রেখে আমরা কাজ করছি। তারপরও কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে।রাজধানীতে ২৩৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এরমধ্যে চারটিকে বিশেষ মণ্ডপ হিসেবে ধরেছি। এগুলো হচ্ছে- ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, ধানমন্ডি পূজামণ্ডপ ও বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ। এ চারটা বিশেষ শ্রেণির মণ্ডপে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে থেকে শুরু করে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ সবকিছু থাকবে।
এছাড়া, ঢাকায় পাঁচটি বৃহৎ মন্দির রয়েছে। সেগুলো হলো- সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পূজামণ্ডপ। এগুলোতেও সিসিটিভিসহ আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
এছাড়া, দুই তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজামণ্ডপ, এক তারকা বিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণীর ৬১টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এসব পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় যেমন সাধারণ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে, তেমনি আয়োজকদের পক্ষ থেকেও পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে।