দেশজুড়ে চলমান বিদ্যুৎ সংকটে খোদ রাজধানী ঢাকাতে এলাকা ভেদে দিনে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষেরা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি সংকট দেখা দেওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে। গ্রামে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। আর ঢাকাতে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা রাকিব হোসেন বলেন, দিনে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। রাতে ঘুমানোর আগে তো যাবেই যাবে। আবার ভোরে বা সকালেও লোডশেডিং হচ্ছে।পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের বাসিন্দা আক্তার হক বলেন, অবস্থা এমন হয়েছে যে এখন আর বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মধ্যে আসে।ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, দিনে ৪ ঘণ্টা করে লোডশেডিং করতে হচ্ছে ৷ গত শনিবার (৮ অক্টোবর) বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট, উৎপাদন ১২ হাজার ২৮৯ মেগাওয়া৷সরকারি তথ্য মতে ঘাটতি ১হাজার ৪৫৯বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় গ্যাস সংকট বেড়েছে ৷ ডলার সংকটে ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে পারছে না কেন্দ্র মালিকেরা ৷ এতে উৎপাদন কম হচ্ছে৷পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, এলএনজির কার্গো আসা কমেছে ৷ এলএনজি থেকে গ্যাস সরবরাহ দৈনিক ৩৮ কোটি ঘনফুটে নেমে এসেছে ৷ আগে যা ছিল ৮৫ কোটি ঘনফুট৷এর আগে, গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারের পক্ষ থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহ ব্যাহতের কথা জানানো হয়। তাই নিজস্ব জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা সত্ত্বে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের কথা বলা হয়।গত ১৯ জুলাই এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের তালিকা তৈরি করা হয়। তবে আদতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল খুব বেশি। শহরাঞ্চলেরর চেয়ে গ্রামের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ।তবে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে উন্নতি হতে থাকে পরিস্থিতির। কমতে থাকে লোডশেডিং। এর মধ্যে গত ৪ অক্টোবর বিদ্যুতের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড অচল হয়ে পড়লে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেটসহ ৩০টির বেশি জেলা ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। তারপর থেকেই লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষ।