গতমাসে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। গত আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিলো ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমে ৯ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পণ্য ও সেবা পেতে দেশবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।গতকাল মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে মূল্যস্ফীতির বিষয়ে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান একই কথা বলেছেন।মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। পণ্য বেশি দামে আমদানি করতে হয় বলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এছাড়া পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। এর বাইরে কারসাজির মাধ্যমে কেউ মূল্য বাড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, বিশ্বে বড় অর্থনীতির দেশেও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ। আগামী বছর ১৩ শতাংশ হতে পারে বলেও আগাম ধারণা দেওয়া হয়েছে। সে তুলনায় বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি খুব বেশি খারাপ নয়।বিবিএসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি সার্বিক মূল্যস্ফীতির চেয়েও বেশি। মাসটিতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। অবশ্য সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে। তবে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি আগস্টের চেয়ে সেপ্টেম্বরে বেশি ছিল। এ দুই মাসে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ৮৫ এবং ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগস্টের মূল্যস্ফীতি শহরের মানুষের চেয়ে গ্রামের মানুষকে বেশি ভুগিয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, সরকারের হিসাবের বাইরে বিকল্প হিসাব করলে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কম হবে না। বিশেষত প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জন্য মূল্যস্ফীতি আরো অনেক বেশি। কারণ, খাদ্যপণ্যের পেছনেই তাদের আয়ের একটা বড় অংশ ব্যয় হয়। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে তারা খুব কষ্টে আছে। সরকারি হিসাবের ৯ থেকে সাড়ে ৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের। আগামীতে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে উৎরাতে হলে বাজারে পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। বিকল্প আমদানির উৎস খোঁজার চেষ্টা করতে হবে। দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরো বাড়াতে হবে।