শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ অপরাহ্ন

বুয়েট ছাত্র ফারদিন হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নতুন মোড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০২২
  • ১২৫ বার পড়া হয়েছে /

বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নতুন মোড় নিচ্ছে। প্রযুক্তিগত তদন্ত ও সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলছেন, পেশাদার মাদক কারবারিদের হাতে খুন হয়েছেন ফারদিন।সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর) নিখোঁজ হওয়ার রাতে ফারদিন কেরানীগঞ্জ, পুরান ঢাকার জনসন রোড এবং রূপগঞ্জ ও ডেমরাসংলগ্ন চনপাড়া এলাকায় অবস্থান করছিলেন। রাত ২টা ৩৫ মিনিটে তিনি ছিলেন চনপাড়া এলাকায়। তদন্তে উঠে এসেছে, ওই রাতে ফারদিন তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে রামপুরায় নামিয়ে দেওয়ার পর আরেক বান্ধবীর সাথে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন। ওই বান্ধবীর সাথে রাত ১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত মেসেঞ্জারে কথা বলেছেন ফারদিন।আরো জানা গেছে, মূলত মাদক কেনার জন্য ফারদিন কেরানীগঞ্জ ও জনসন রোডে যান। কয়েকটি জায়গায় কিনতে না পেরে শেষমেশ তিনি যান ডেমরা সংলগ্ন চনপাড়ায় পূর্বপরিচিতদের কাছে। সেখানে ফেনসিডিল কেনার চেষ্টা করেন তিনি। ফেনসিডিলের দরদাম নিয়ে চনপাড়া এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শাহীন ওরফে সিটি শাহীন ও তার লোকজনের সাথে ফারদিনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আট-দশজন মিলে ফারদিনকে বেধড়ক পেটায়। পরে ওই রাতেই শাহীন ও তার লোকজন ফারদিনের নিথর দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।এদিকে র‍্যাব জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাতে চনপাড়ায় মাদকের স্পটে র‌্যাব-১ এর একটি দল অভিযান চালায়। এসময় মাদক কারবারিরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এসময় সিটি শাহীন নামে এক মাদকের গডফাদার গুলিবিদ্ধ হয় এবং পরে চিকিৎধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে মারা যায়।আরেকটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, হত্যার সাথে মাদক কারবারিদের যোগসূত্রের বিষয়টি সামনে আসার পর শাহীন ও তার লোকজনকে গ্রেপ্তারে একাধিক সংস্থা মাঠে নামে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রাথমিক ধারণা ছিল, হত্যার পর ফারদিনের মরদেহ কেরানীগঞ্জসংলগ্ন কোনো নদীতে ফেলা হয়েছে। তবে প্রযুক্তিগত তদন্তে ফারদিনের সর্বশেষ অবস্থান চনপাড়া এলাকায় নিশ্চিত হওয়ার পর গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা, চনপাড়াসংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে বুয়েট ছাত্রের লাশ ফেলা হয়। সর্বশেষ যে মাদক স্পটে ফারদিনের অবস্থান দেখা যায়, শীতলক্ষ্যা থেকে সে স্থান সামান্য দূরে।প্রযুক্তিগত তদন্তে যুক্ত উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফারদিনের অবস্থান কেরানীগঞ্জে ছিল, এরপর জনসন রোড। সেখান থেকে যান চনপাড়ায়।ফারদিন হত্যার তদন্তে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, চনপাড়ায় যার বাসার পেছনে নিয়ে মাদক কারবারিরা ফারদিনকে হত্যা করেছে, তার নাম-পরিচয় জানা গেছে। পুলিশকে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, হত্যার পর নৌকা ভাড়া করে বুয়েট ছাত্রের লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে ওই নৌকার মালিককে খুঁজছে পুলিশ।এদিকে ফারদিনের বাবা ও মামলার বাদী কাজী নূর উদ্দিন রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফারদিনের যে স্বভাব-চরিত্র এবং যাদের সাথে ওর মেলামেশা, তার তো চনপাড়ায় যাওয়ার কথা নয়। তাকে কখনো একটি সিগারেট ফুঁকতে দেখিনি। মাদকের স্পটে কেন গিয়েছিল- এ রকম কথা শুনতে খারাপ লাগছে। সব সময় টিউশনি-পড়াশোনা নিয়ে সে ব্যস্ত থাকত।যদিও এর আগে পুলিশের ধারণা ছিল, ফারদিন মৃত্যুর নেপথ্যে থাকতে পারে প্রেম। তাই হত্যা মামলার প্রধান আসামি বান্ধবী বুশরাকে গ্রেপ্তার করে ইতোমধ্যে পাঁচ দিনের রিমান্ড নিয়েছে পুলিশ।প্রসঙ্গত, নিখোঁজের তিনদিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। গত সোমবার (৭ নভেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আরো পড়ুন

এস এন্ড এফ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

Developer Design Host BD