৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে জাপানের মূল্যস্ফীতি। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। তার প্রভাবেই মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে জাপানে।মূলত, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক অসাড়তার কারণে চলতি বছর মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের দরপতন ঘটে। তারপর থেকেই জাপান সংকটে পড়তে থাকে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার নীতি সুদহারের পার্থক্যের কারণে ইয়েনের দরপতন হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) জাপান সরকারের প্রকাশ করা একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির হার গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় এ বছর তিন দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটিতে মূল্যস্ফীতির এমন দ্রুতগতি ১৯৮২ সালের পরে আর দেখা যায়নি।তাছাড়া, চলতি বছরের অক্টোবরেই ৩২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন ঘটে ইয়েনের। ওই মাসে এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রার মান দাঁড়ায় ১৫১ ইয়েন। যদিও এখন এ মান ১৪০ ইয়েনের আশেপাশে।পরিসংখ্যান বলছে, অন্যান্য উন্নত দেশ যেমন- যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় জাপানে মূল্যস্ফীতির হার তুলনামূলক কম হলেও, তা জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশঙ্কা বা অনুমানকে ছাড়িয়ে গেছে। বিষয়টিকে অনেকে দেশটির কয়েক দশকের অর্থনৈতিক স্থবিরতার প্রতিফলন বলে মনে করছেন।এদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশ্বব্যাপী সুদের হার বাড়ার প্রবণতাকে অস্বীকার করেছে।
এ সপ্তাহেই দ্য ব্যাংক অব জাপানের গভর্নর হারুহিকো কুরোদা বলেন, করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাবের হাত থেকে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা ও উদ্দীপনা ধরে রাখতে হবে। লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতি সাময়িক সমস্যা। মূলত বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটি হয়ছে।এ সপ্তাহের শুরুতে প্রকাশিত একটি অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে জানা যায়, অপ্রত্যাশিতভাবে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে জাপানের অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পর তিন ত্রৈমাসিকে ধারাবাহিকভাবে সংকুচিত হয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো- দেশটির নাগরিকরা ব্যক্তিগত খরচ কমিয়ে দিয়েছেন।জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গত মাসে ২৬ হাজার কোটি ডলারের প্রণোদণা ঘোষণা করেন। অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া ও ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচ সামাল দিতে এ সিদ্ধান্ত নেন কিশিদা।