১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে উরুগুয়ের কাছে হেরে শিরোপা জেতা হয়নি আর্জেন্টিনার। এরপর কিছুটা অনিয়মিত হয়ে আর ফাইনালে খেলা হয়ে ওঠেনি দলটির। এবার অনেক কষ্টে সৃষ্টে একাদশ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে সুযোগ পেয়েই ৪৮ বছরের খরা কাটায়। ১৯৭৮ সালে এসে প্রথমবার শিরোপা উল্লাসে মেতেছিল মারিও ক্যাম্পোসের দল। যদিও চূড়ান্ত পর্বের খেলার আগে স্বাগতিক দেশ পরিবর্তনের দাবী উঠেছিল। এই সুযোগে বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ড লবিং করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আগের আসরের মতো দল সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে। আর্জেন্টিনায় খেলা হলেও লাতিনের আরেক দেশ ব্রাজিলেরও শিরোপা জেতার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তারা সেটি কাজে লাগাতে পারেননি। ফাইনালে নেদারল্যান্ডকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো শিরোপা উল্লাসে মাতে আর্জেন্টিনা।পড়শি দেশে খেলা গেলেও ইতালিকে ২-১ গোলে পরাজিত করে তৃতীয় স্থান লাভ করে ব্রাজিল। তবে এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদটা করেছেন ইয়োহান ত্রুইফ।
টোটল ফুটবলের এই জনক পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন, ‘যে দেশে সামরিক শাসন চলছে, সে দেশে কোনভাবেই খেলা উচিৎ নয়’। অনেকটা বিস্ময়করভাবেই মাত্র ৩০ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অথচ সেই সময় ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন তিনি। অথচ আগের আসরের মতো এই আসরে দারুণ একটা দল। টানা দুই আসরে ফাইনালে ওঠেও শিরোপা জিততে না পারার চরমভাবে হতাশ ছিলেন তারা। যদিও ফাইনালের আগ পর্যন্ত দারুণ ফুটবল খেললেও শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আর সেই খেলার দেখা মেলেনি।
একনজরে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ
স্বাগতিক : আর্জেন্টিনা
চ্যাম্পিয়ন : আর্জেন্টিনা (প্রথম শিরোপা জয়)রানার্সআপ : নেদারল্যান্ডস
তৃতীয় স্থান : ব্রাজিল
চতুর্থ স্থান : ইতালি
সময়কাল : ১-২৫ জুন ১৯৭৮
অংশগ্রহণকারী দল : ১৬টি (ইতালি, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, পশ্চিম জার্মানি, তিউনিশিয়া, মেক্সিকো, অষ্ট্রিয়া, ব্রাজিল, স্পেন, সুইডেন, পেরু, নেদারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ইরান)
ভেন্যু : ৬টি (৫টি শহরে)
মোট ম্যাচ : ৩৮টি
গোল সংখ্যা : ১০২টি (ম্যাচ প্রতি ২.৬৮টি)
দর্শক সংখ্যা : ১৫,৪৫,৭৯১ (ম্যাচ প্রতি ৪০,৬৭৯ জন)
সর্বোচ্চ গোলদাতা : মারিও ক্যাম্পোস, আর্জেন্টিনা (৬ গোল)
সেরা যুব খেলোয়াড় : অ্যান্তোনিও কাবরিনি (ইতালি)
ফেয়ার প্লে ট্রফি : আর্জেন্টিনা।