বাঙালীর হৃদয়ের চিরন্তন ঐতিহ্যের সুর বাঁশির সুরে ভেসে যায় রাতের নির্দিষ্ট স্থানে। হাতে বাঁশি ঠোঁটে সুর মিলিয়ে বাঁশি বাজিয়ে তাল তুলেন।
কিশোরগঞ্জের দানাপাটুলী ইউনিয়নের কুদ্দুস মিয়া লাঠিয়াল (৭৭) বছরের এক বাঁশিওয়ালা। জানা যায়, আব্দুল কুদ্দুস মিয়া লাঠিয়াল দানাপাটুলী ঈদা সরকার বাড়ীর মৃত সুরুজ আলী সরদারের ছেলে। আব্দুল কুদ্দুস মিয়া ছোট বেলা থেকে হাতে তুলে নেন বাঁশি, তিনি বাঁশ সংগ্রহ করে নিজে বাঁশি বানিয়ে বাঁশি বাজান, বাঁশি সুরে এলাকার লোকজন জমে উঠে। দিনে একাকী নিঝুম রেলওয়ে পথে বাঁশির সুরে মন ভেসে যায় বাঁশি বাজিয়ে।
গতকাল রোববার সরজমিনে গেলে প্রতিবেদককে জানান, ১২টি স্কেলের সবগুলো স্বর তোলা
বাঁশি বাঁশরি ও মোহন বাঁশি নামেও পরিচিত। উপমহাদেশে বাঁশির জন্য উপযুক্ত হলো তরলা বাঁশ। এ ছাড়াও বিশেষ ধরনের মুলি বাঁশ বা নল বাঁশ উভয় দিকে বেয় আকার বা পুরুত্ব একই সমান। পুরুত্ব পাতলা হলে মিষ্টি সুর উঠে। এই বাঁশ রোদে শুকিয়ে বাঁশির মাপ অনুযায়ী কেটে রাখা হয়। বাঁশিতে ৩ থেকে ৭টি ছিদ্র থাকে। একটি ছিদ্র ঠোঁটে ধরে
ফুঁ দিয়ে এবং বাকি ছিদ্রগুলোতে দুই হাতের আঙ্গুলে ওপর নিচ করে সুর গেঁথে নিতে হয়।
বাঁশির অনেক ধরনের আছে। যেমন, মোহন বাঁশি, আঁড় বাঁশি, বীন বাঁশি, বেলুন, খানদানি কোকিল বাঁশি, তোতা, ফেন্সি বাঁশি। তবে বাঁশির রানী মোহন বাঁশি।
বাঁশির সুরের স্কেলের কয়েকটি সার্প আছে। এ বি সি এ সার্প বি সার্প সি সার্প ও জি সার্প। সারেগামাপাধানি ৭টি ও সংযুক্ত ৫টি স্বর মোট ১২টি স্বরে বাঁশি বাজে যারা বাঁশি বানায় তারা বাঁশিওয়ালা যারা বাজায় তারা শিল্পী।
দেশে বাঁশি শিল্পীর সংখ্যা কম। যারা আছেন তাদের কালে ভদ্রে মঞ্চে দেখা যায়। যারা বাঙালীর চিরন্তন ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ও বাঁশের বাঁশি বাঙালীর পরিচিতির বড় অংশ হয়ে আছে। মানুষে মানুষে মেলা বন্ধনের পালায় যে সুর ভেসে যায় দূর বহু দূর।