শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন

গবিতে রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আন্দোলন: শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর

মুনিয়া রহমান জান্নাত, গবি প্রতিনিধি
  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪
  • ১৭৭ বার পড়া হয়েছে /
শিক্ষার্থী আবিদ হাসান। ছবি- প্রতিনিধি

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্বরে আন্দোলন চলাকালীন সময়ে এই হাতাহাতির ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এর আগে শিক্ষককে মারতে যাওয়া হুমকি ও অশ্রাব্য ভষায় গালাগালসহ আইন বিভাগের ক্লাস চলাকালে বিঘ্ন ঘটানোয় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেয় বিভাগটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ জমা দিয়ে আসার পথে হঠাৎ আন্দোলনকারীদের বাগবিতণ্ডার জেরে এক পর্যায়ে এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী ও রেজিস্ট্রার অপসারণ আন্দোলনের অন্যতম মূল হোতা আবিদ হোসেন জানান, চলমান আন্দোলনের ব্যপারে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে শিক্ষার্থীদেরকে অবগত করার এক পর্যায়ে আইন বিভাগে গিয়ে কথা বলি। আসার সময় ডিপার্টমেন্ট থেকেই আইনের শিক্ষক লিমন হোসেন আমাকে এখানে আসার কারণ জানতে চাইলে আমাদের আন্দোলনের কথা জানানো মাত্রই তিনি আমার উপর উগ্র আচরণ শুরু করেন।

তিনি জানান, প্রথমে বাবা-মা তুলে গালি-গালাজ, পরে সরাসরি আক্রমণ করেন। মুখে ও বুকে চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন। এসময় আইন বিভাগের শিক্ষক এবং অন্যান্য বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন যারা লিমন হোসেনকে মারতে বাধা দিতে থাকেন।

অভিযোগকারী আরোও বলেন, আইন বিভাগ থেকে ফিরে ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বরে আসার কিছুক্ষণ পরেই অন্তু দেওয়ান সহ আইনের কিছু শিক্ষার্থী এবং অন্য বিভাগের কয়েকজন এসে অতর্কিত হামলা করে বসে। মারের প্রকোপে মাটিতে পড়ে গেলেও তাদের মারধর চলতেই থাকে। পরবর্তীতে আমার সহযোগীরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

উক্ত ঘটনায় অভিযুক্ত আইন বিভাগের প্রভাষক লিমন হোসেন অভিযোগকারীর দিকে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, রাজনীতি বিভাগের আবিদ ও রসায়ন বিভাগের নাসিম সহ ৩-৪ জন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে এবং আমার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আমাকে অপমান মূলক কথা বলে। এক পর্যায়ে তারা আমার গায়ে হাত তোলার জন্য তেড়ে আসে৷ তখন আমাদের বিভাগীয় প্রধানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা এর সমাধান করে।

মারতে আসার কারণ জিজ্ঞেস করলে আইন বিভাগের প্রভাষক লিমন জানান, আমাকে কিছু শিক্ষার্থী এসে জানায় যে স্যার আমার ক্লাসের টাইমে রসায়ন ও রাজনীতি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রারের বিপক্ষে মানববন্ধন করার জন্য আমাদের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপর চাপ প্রয়োগ করে এবং রীতিমত জোর-জবরদস্তি শুরু করে৷ এটা শুনার পর আমি ঐ সকল শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলার জন্য বের হই ও তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি। তখনই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে এই ঘটনাটি ঘটে।

তিনি আরো জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাতে জানতে পারি নিচে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। উক্ত ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।

অন্য দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলনের ব্যাপারে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে জানাতে জানাতে আইন বিভাগে আসেন কথা শেষ করে বের হওয়ার পরেই আইন বিভাগের শিক্ষক লিমন হোসেন আবিদকে ডেকে ডিপার্টমেন্টে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। আবিদ রেজিস্ট্রারের অপসারণ আন্দোলনের কথা বলা মাত্রই হুমকিধামকি শুরু করেন এবং আবিদের কলার ধরে চড় থাপ্পড় শুরু করেন। এতটাই আক্রমণাত্মক ছিলেন যে তাকে অন্যরা ফেরাতে পারছিলেন না। এরপর লিমন হোসেন তার সমর্থিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দিতে যান। পরবর্তীতে তারই সমর্থিত কিছু শিক্ষার্থী আবিদকে ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বরে একা পেয়ে বেধড়ক মারধর করেন।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘এই অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আগামীকাল সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

আরো পড়ুন

এস এন্ড এফ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

Developer Design Host BD