ফোন ধীরে চার্জ হলে অনেকেই বিরক্ত হন। আবার অনেকের ফোন দিনে দুই বার চার্জ দেওয়া দরকার হয়। আর যদি দিনের মাঝে বা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায় তখন আর বিরক্তির শেষ থাকে না।এখন যদিও বেশিরভাগ ফোনে ইউএসবি-সি পোর্ট দিয়ে চার্জ করতে তুলনামূলক কম সময় লাগছে, তবুও কাজের মাঝে ফোন চার্জে লাগিয়ে রাখার অভিজ্ঞতা সুখকর হয় না। কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করলে অনেক দ্রুত অ্যানড্রয়েড ফোন চার্জ করা যায়।
১. এয়ারপ্লেন মোড অন
আপনার ব্যাটারির চার্জ কমার বড় একটি কারণ হলো নেটওয়ার্ক সিগন্যাল। সিগন্যাল যত খারাপ হবে, আপনার ব্যাটারির চার্জ তত দ্রুত শেষ হবে। ফোন চার্জ করার সময় দুর্বল সিগন্যালে ব্যাটারির শক্তি অপচয় হয়।এর সমাধান হলো, চার্জে প্লাগ ইন করার আগে আপনার ফোনটিকে এয়ারপ্লেন মোডে রাখা। পরীক্ষায় দেখা যায় যে এটি সম্পূর্ণ চার্জের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের পরিমাণ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে৷ ব্যাটারির চার্জ পূর্ণ হয়ে গেলে এটি একই প্রক্রিয়ায় গিয়ে এয়ারপ্লেন মোড বন্ধ করুন।
২. ফোন বন্ধ রাখা
আপনার ফোনটি চার্জ করার সময় বন্ধ থাকলে, অনেক দ্রুত ব্যাটারি চার্জ হবে৷ এক্ষেত্রে চার্জিংয়ের সময় ব্যাটারি থেকে কোনো চার্জ ক্ষয় হবে না।তবে অবশ্যই, চার্জ করার সময় ফোন বন্ধ রাখার কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। তবে আপনি যদি বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে ফোনটিকে দ্রুত ১৫-মিনিটের একটি বুস্ট দিতে চান তবে সেক্ষেত্রে এটিকে বন্ধ করা অবশ্যই একটি ভালো উপায়।
৩. চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার না করা
চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার করবেন ন। এ সময় ফোন ব্যবহার করলে তা চার্জিংয়ের গতি ধীর করে দেয়৷ বিশেষ করে, গেমের মতো ভারী অ্যাপ ব্যবহার করলে ফোন গরম হয়ে উঠবে, চার্জিং প্রক্রিয়া ধীর হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ব্যাটারির ক্ষতি করবে। ফোন দীর্ঘ সময় গরম হয়ে থাকলে এর ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে। এ কারণে ফোন চার্জারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় গেম খেলা, ভিডিও বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
৪. ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা অ্যাপ এবং ফিচার বন্ধ রাখা
ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং অ্যাপ ব্যবহার না করলেও ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যবহার করে। সরাসরি ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন অ্যাপের মাধ্যমেও একটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি সাধারণত ধীরগতিতে চার্জ হতে পারে। তাই এই ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিং অ্যাপ্লিকেশানগুলি বন্ধ করে চার্জিংয়ের গতিকে বাড়িয়ে তুলতে পারেন। অ্যাপ সেটিংসে গিয়ে আপনি চাইলে এগুলো বন্ধ করে নিতে পারেন।এছাড়া লোকেশন, ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথের মতো ব্যাটারি খরচকারী ফিচারগুলো বন্ধ করুন৷ ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ব্যাটারি খরচ করে। চার্জিংয়ের সময় এগুলো বন্ধ রাখলে ডিভাইস চার্জিংয়ে গতি বাড়বে।
৫. পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার
চলার মাঝে আপনার ফোন রিচার্জ করার প্রয়োজন হলে উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি প্রায়ই সারাদিন বাইরে থাকেন তাহলে একটি পাওয়ার ব্যাঙ্ক হতে পারে জীবন রক্ষাকারী ডিভাইস।অনেক পাওয়ার ব্যাংক ওয়াল সকেটের মতো একই অ্যাম্পেরেজ আউটপুট দেয় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও বেশিও দেয়। কিন্তু যখন আপনার ফোন ২-অ্যাম্প আউটপুট দিয়ে দ্রুত চার্জ হতে পারে তখন একটি বিষয় সম্পর্কে সতর্ক থাকবেন। আপনাকে তখন নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার ইউএসবি ক্যাবলটি এই অতিরিক্ত শক্তি পরিচালনা করার ক্ষমতা রাখে কিনা।
৬. ভালো মানের ক্যাবল ব্যবহার
ক্যাবলের মান চার্জিং এর গতিতে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। চার্জিং ক্যাবলের ভিতরে চারটি পৃথক তার আছে—লাল, সবুজ, সাদা এবং কালো। সাদা এবং সবুজ তার ডেটা স্থানান্তরের জন্য, লাল এবং কালো বিদ্যুৎ পরিবহন করে। একটি স্ট্যান্ডার্ড ২৮-গেজ তার প্রায় ০ দশমিক ৫ অ্যাম্পস বহন করতে পারে; অন্যদিকে একটি বড় ২৪-গেজ তার ২ অ্যাম্পস বহন করতে পারে।সাধারণত, সস্তা তারগুলি ২৮-গেজ সেটআপ ব্যবহার করে, যার ফলে চার্জিং গতি কম হয়। আপনি যদি চার্জিং দক্ষতার জন্য আপনার তারের পরীক্ষা করতে চান, তাহলে ‘অ্যাম্পিয়ার’ অ্যাপটি ডাউনলোড করুন। এটি আপনাকে আপনার ডিভাইসের চার্জ এবং ডিসচার্জের হার পরিমাপ করে দেখাবে।