৪০০ মানুষকে ভূরিভোজ করিয়ে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সজিবুর রহমান নিজের জন্মদিন উদ্যাপন করেছেন। ভূরিভোজের পাশাপাশি ছিল কেক কাটা, রক্তদান, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ জমকালো নানা আয়োজন। তবে সাড়ম্বরে উদ্যাপন করা এসব কর্মসূচি আয়োজনে টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শাহপরাণ হলে প্রবেশ করে জন্মদিন পালন করতে দেখা গেছে ছাত্রলীগের এক নেত্রীকেও।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সজিবুর রহমানের ৩০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে গতকাল বুধবার (৮ মে) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুনতলায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পরে আনন্দ মিছিল, কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, মিলাদ মাহফিল ও খাবার বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে আগত সবার জন্য চেয়ার পাতা হয়। মুক্তমঞ্চের পাশে কেক কাটার জায়গাটি দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রায় ৪০০ জনের মধ্যে মোরগের আখনি পোলাউ বিতরণ করা হয়। সেখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং বেশ কিছু সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরও ছিল। এছাড়াও সজিবুর রহমানের জন্মদিনের কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাদের পাশপাশি মহানগর ও অন্যান্য শাখার অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন বলেও জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাবি ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, সাধারণ সম্পাদকের জন্মদিন আয়োজনে প্রায় এক লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এত টাকার উৎস নিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যেই গুঞ্জন উঠেছে। এ ছাড়া ঘটা করে এমন আয়োজন নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও নানা প্রশ্ন তুলেছেন।
এ বিষয়ে শাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান বলেন, খাবারের টাকাটা আমার দেওয়া। এতে ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাকি যেসব কর্মসূচি হয়েছে সেই টাকা জুনিয়ররা (ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী) দিয়েছে। সব মিলিয়ে খুব বেশি খরচ হয়নি।
এদিকে সজিবুর রহমানের জন্মদিন পালনে শাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মধ্যরাতে ছাত্রদের হলের গেস্ট রুমে গিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। জন্মদিন পালনে রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা সায়মন পুষ্প ছাত্রদের আবাসিক হল শাহপরানের সামনে যান। পরে সেখান থেকে অন্যান্য নেতাকর্মীর সঙ্গে ভেতরে গেস্ট রুমে গিয়ে কেক কেটে সাধারণ সম্পাদকের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
মধ্যরাতে ছাত্র হলে প্রবেশের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা সায়মন পুষ্পকে মুঠোফোনে কল করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে শাহপরান হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক কৌশিক সাহা বলেন, আমরা এই বিষয়ে অবগত হয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা সায়মন পুষ্প বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের সি-ব্লকের ৪০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তিনি প্রায় এক বছর আগে তার একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করেছেন। এরপরও ছাত্রী হলে থেকে যাচ্ছেন। অথচ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তথ্য সূত্র- ঢাকা পোস্ট